পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

By

Published : May 3, 2020, 9:04 PM IST

ETV Bharat / state

বন্ধ পুলকার, বেকার প্রায় 10 হাজার চালক-খালাসি

আসানসোল বলয়ে যে পাঁচ হাজার পুলকার চলে, তার মধ্যে প্রায় হাজার তিনেক গাড়ির মালিকের কোনও বিকল্প আয়ের পথ নেই ।

COVID 19
পুলকার

আসানসোল, 3 মে : লকডাউনের কারণে বন্ধ স্কুল । আর এতেই মাথায় হাত পুলকার চালকদের । বন্ধ হয়ে গেছে পুলকার পরিবহন ব্যবস্থা । অন্ততপক্ষে প্রায় 10 হাজার কর্মী কাজ হারিয়ে বাড়িতে বসে রয়েছেন । কোনও রোজগার নেই । স্কুল না খুললে আগামী দিনে তাদের কীভাবে চলবে? পুলকার মালিকরাই বা কতদিন চালকদের বেতন দিতে পারবেন? উত্তর নেই চালক বা মালিক কারও কাছেই ।

আসানসোলে সরকারি ও বেসরকারি স্কুল মিলে প্রায় পাঁচ হাজার পুলকার চলে । বর্তমানে স্কুল বন্ধ । বন্ধ পুলকারও । এই পুলকারগুলির মাধ্যমে নিজেদের জীবন নির্বাহ করেন প্রায় 10 হাজার চালক ও খালাসি । এমতাবস্থায় প্রচণ্ড সমস্যায় পড়েছেন পুলকার মালিক এবং কর্মীরা । অভিভাবকদের অনেকেই মার্চ মাসে অর্ধেক টাকা দিয়েছেন । এপ্রিল মাস থেকে আর কোনও টাকা দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বেশিরভাগ অভিভাবকরাই । ফলে রোজকার বন্ধ হয়েছে পুলকার মালিকদের ।

স্কুল না খুললে আগামী দিনে কীভাবে চলবে ? চিন্তায় পুলকারের চালক-খালাসিরা

আসানসোল বলয়ে যে পাঁচ হাজার পুলকার চলে, তার মধ্যে প্রায় হাজার তিনেক গাড়ির মালিকের কোনও বিকল্প আয়ের পথ নেই । ফলে পুলকারের চালক ও খালাসিদের বেতন দিতে পারছেন না অনেকেই । কেউ কেউ মানবিকতার খাতিরে চালক ও খালাসিদের বেতন দিয়ে গেলেও এভাবে কতদিন চলবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন ।

পাশাপাশি প্রায় হাজারের কাছাকাছি পুলকারের মালিক এমনও রয়েছেন, যারা সদ্য ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনেছেন, নিজেদের গাড়ি নিজেরাই চালান, কোনও চালক বা খালাসি রাখেননি । চিন্তা বাড়ছে তাঁদেরও । আগামীদিনে কীভাবে গাড়ির EMI মেটাবেন তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় রাত কাটাচ্ছেন তাঁরা ।

স্কুল কবে খুলবে, কেউ জানে না । ফলে আগামী দিনে কী হবে সেটা ভেবেই আকুল হচ্ছেন পুলকার মালিকরা এবং কর্মীরা ।

আসানসোল পুলকার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হেমন্ত মণ্ডলকে এবিষয়ে প্রশ্ন করায় তিনি বলেন, "আসানসোলে মোট পাঁচ হাজার পুলকার রয়েছে । এই গাড়িগুলি অন্য কোথাও চলে না । বর্তমানে স্কুল না খোলায় গাড়িগুলি দাঁড়িয়ে আছে । কতদিন এইভাবে চলবে জানি না । এরকম চললে সংসার চালাতে পারব না ।

এক মাসেরও বেশি হতে চলল, ঘোরেনি চাকা

স্কুল বন্ধ থাকায় একপ্রকার অবহেলাতেই পড়ে রয়েছে পুলকারগুলি । খারাপ হচ্ছে যন্ত্রাংশ । আসানসোলের এক পুলকারের মালিক সুনীল সিনহা বলছেন, "গাড়ি এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে যন্ত্রাংশ খারাপ হয়ে যাবে । টায়ার নষ্ট হয়ে যাবে । ফের নতুন করে গাড়িগুলি কীভাবে চালাব বুঝতে পারছিনা ।" একইসঙ্গে অভিভাবকদের একাংশের উপরেও ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তিনি । বলছেন, "অভিভাবকরা পাশে দাঁড়াচ্ছে না । চালক ও খালাসিদের বেতন এই মাসে দিতে পেরেছি । পরের মাসে পারব কি না তাও জানি না । তাঁরা কী করবেন, সেটাও বুঝতে পারছি না ।"

স্থানীয় এক পুলকারের খালাসি সুজিত রজক জানালেন, এই মাসে কোনওমতে মালিক বেতন দিয়েছেন । পরের মাস থেকে মনে হয় আর বেতন পাব না । কীভাবে সংসার চালাব জানি না । "

ব্যবসা বদলে অন্য ব্যবসাতেও চলে যেতে পারছেন না পুলকার মালিকরা । লকডাউনে এই গাড়ি বিক্রিও করতে পারছেন না । মালিক থেকে শুরু করে চালক ও খালাসি, সকলেই চাইছেন এই অন্ধকারের সময় দূর কেটে যাক । দুশ্চিতা, না হলে আগামী দিনে প্রায় 10 হাজার মানুষ এবং তাদের পরিবারকে অনাহারে থাকতে হবে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details