দুর্গাপুর, 30 জুলাই : সব সম্পত্তি তাঁর নামে লিখে দেওয়া হোক । ছেলের সেই দাবি মেটাতে পারেননি বৃদ্ধা । তাই তাঁকে জিনিসপত্র সহ বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে ঘরে তালা বন্ধ করে দিল ছেলে । ঘটনাটি দুর্গাপুর পৌরনিগমের 38 নম্বর ওয়ার্ডের । ঘটনায় কোকওভেন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বৃদ্ধা পদ্মা চ্যাটার্জি ।
পদ্মাদেবীর দুই ছেলে । বড় ছেলে বাসুদেব চ্যাটার্জি ও ছোটো ছেলে জয় চ্যাটার্জি । স্বামী ছিলেন DPL-র কর্মচারী । বছর পাঁচেক আগে মারা যান তিনি । তারপরই দুর্গাপুর পৌরনিগমের 38 নম্বর ওয়ার্ডের হেডকোয়ার্টারে একফালি জমি কিনে বাড়ি তৈরি করেন পদ্মাদেবী । স্বামীর সঞ্চিত টাকার প্রায় সবটা দিয়ে বাড়ি বানিয়ে নেন তিনি । অভিযোগ, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই বৃদ্ধা পদ্মাদেবীকে দেখেন না তাঁর দুই ছেলে । কোনওরকমে দিন কাটান তিনি । বড়ছেলে থাকেন কোকওভেন থানার অন্তর্গত লেবারহাট কলোনিতে । আর ছোটো ছেলে পদ্মাদেবীর পাশেই বাড়ি তৈরি করে থাকেন ।
অভিযোগ, কিছুদিন ধরেই বড় ছেলে পদ্মাদেবীকে জোর করেন বাড়ি লিখে দেওয়ার জন্য । আবার কখনও বাড়ি বিক্রি করে নগদ টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিতেন । ছেলের সেই প্রস্তাবে বারবারই অসম্মতি প্রকাশ করেন পদ্মাদেবী । 25 জুলাইও বাড়ি বিক্রির জন্য পদ্মাদেবীকে চাপ দিতে শুরু করেন বাসুদেববাবু । কিন্তু, পদ্মাদেবী তাতে রাজি না হলে তাঁকে ঘর থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন এবং বাড়ির সমস্ত জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলে ঘরে তালা দিয়ে দেন বলে অভিযোগ । ঘটনায় পদ্মাদেবী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয় ।
পদ্মাদেবী বলেন, "আমি তো বলিনি কোনও ছেলেকেই সম্পত্তি দেব না । আমি শুধু চাই জীবনের শেষ কটা দিন এই বাড়িতে থাকতে । বড়ছেলে বাড়িতে এসে সম্পত্তি লিখিয়ে দেওয়ার জন্য আমায় চাপ দিত । রাজি না হওয়ায় আমাকে মারধর করত, গালিগালাজ করত । এমন কী প্রতিবেশীরা বাধা দিতে এলে তাঁদের কেউ গালিগালাজ করত ।" কোকওভেন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন পদ্মাদেবী । অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।
ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালে পুলিশকে তিনি বলেন, "স্যার ওকে বলুন না আমার মৃত্যুর পরে তো এই ঘর, জমি ওরা দু'ভাই পাবে । "