অণ্ডাল (পশ্চিম বর্ধমান), 9 মার্চ: বিয়ের তিন বছরের মধ্যেই পথ দুর্ঘটনায় স্বামীকে হারিয়েছিলেন রিম্পি চট্টোপাধ্যায় ৷ বয়স তখন সবে 23 ৷ তবে স্বামীকে হারালেও শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে যাননি ৷ বরং তাদের ভালোবাসায় সেই থেকে রয়ে গিয়েছিলেন অণ্ডালের হরিপুরের চিঁচুড়িয়া গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে ৷ বউ নয়, মেয়ের মতোই সেখানে থাকতেন রিম্পি ৷ কিন্তু এভাবে সাতবছর থাকতে থাকতে রিম্পির ভবিষ্যত জীবনের কথা ভেবে ফের তাঁর বিয়ের আয়োজন করলেন শ্বশুরবাড়ি লোকেরাই (In Laws Family Gave Remarrige of Daughter in Law)৷ বৃহস্পতিবার আসানসোলের ঘাগরবুড়ি মন্দিরে ফের বিয়ে হল রিম্পির ৷
2013 সালে চিঁচুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ধীরাজ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিয়ে হয় রিম্পির । 2016 তে জামুড়িয়ার চাঁদা মোড়ে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ধীরাজের । তারপর থেকে শ্বশুরবাড়িতেই ছিলেন রিম্পি । বর্তমানে তাঁর বয়স মাত্র 29 । বাকি জীবনের কথা ভেবে তাঁর বিয়ে দিলেন শ্বশুরবাড়ির পরিবার ৷ এই বিষয়ে রিম্পির প্রথম পক্ষের ভাসুর পৃথ্বীরাজ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "ভাইয়ের মৃত্যুর পরও তার স্ত্রী রিম্পি আমাদের বাড়িতেই থেকেছে মেয়ের মতো । কিন্তু ওর তো একটা জীবন আছে । ভবিষ্যত আছে । এত অল্প বয়স ওর । সেই কারণেই আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে ঠিক করি যে, ওর আবার বিয়ে দেওয়া হবে । তাই পাত্র খোঁজা শুরু করি ৷ আসানসোলের কাঁখয়া গ্রামের বাসিন্দা রঘুনাথ রায়ের সঙ্গে রিম্পির বিয়ে দিলাম। যেভাবে বাড়ির মেয়েকে বিয়ে দেওয়া হয় সেইভাবেই আমরা আমাদের বাড়ির গৃহবধূকে কন্যাস্নেহে বিয়ে দিলাম (Widowed Daughter Remarriage)।"
এদিন খাট ও আলমারি-সহ সমস্ত আসবাবপত্র সাজিয়ে বিয়ের গয়না, যৌতুক সমস্ত আয়োজন করেই বৃহস্পতিবার ঘাগরবুড়ি মন্দিরে রিম্পির বিয়ে হয় । নতুন জীবন পেয়ে খুশি রিম্পি । তবে সে তাঁর প্রথম পক্ষের শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চায় । স্বামী রঘুনাথও সেই দাবি মেনে নিয়েছেন ।
পাত্র রঘুনাথ রায়ের কাকা কেশব রায় বলেন, "আমরা মেয়েটির জীবনের করুণ কাহিনী শুনেই রাজি হয়েছি । এত অল্প বয়সে মেয়েটি বৈধব্য জীবন পেয়ে হতাশার দিন পালন করছে ৷ এটা শোনার পরে মনে হয়েছে, আমাদের বাড়ির ছেলের সঙ্গে ও বিয়ে দিই । সেই মতো আমরা সম্বন্ধ করেছি । ওরা সুখে থাক, ভালো থাক এটাই চাই ।"