পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

বেশি কথা বললে মুখে লিউকো প্লাস্ট লাগিয়ে দেব, মোদিকে আক্রমণ মমতার

আজ রানাঘাটের বগুলায় জনসভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । রানাঘাটের প্রার্থী রূপালি বিশ্বাসের সমর্থনে প্রচারে আসেন তিনি ।

ফাইল ফোটো

By

Published : Apr 20, 2019, 9:54 PM IST

Updated : Apr 20, 2019, 11:27 PM IST

রানাঘাট, 20 এপ্রিল : "বেশি কথা বললে মুখে লিউকো প্লাস্ট লাগিয়ে দেব । নরেন্দ্র মোদি তুমি মিথ্যে কথা বল । এত বড় সাহস তোমার । লজ্জা করে না । মিথ্যে কথা বললে জনগণের সামনে কান ধরে ওঠবোস করতে হবে।" আজ নদিয়ার বগুলার একটি জনসভায় নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । রানাঘাটের প্র্রার্থী রূপালি বিশ্বাসের হয়ে আজ প্রচারে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । নদিয়ার কালিগঞ্জের পাগলাচণ্ডীর মাঠে সভা করার পর বগুলায় সভা করেন । সভার শুরু থেকেই মোদিকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখেন তিনি । নিজের কাজের খতিয়ান দেওয়ার পাশাপাশি মোদির কাছ থেকেও কাজের হিসাব চান ।

সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বলেন, "বলছে কিছু করিনি । এখানে পাগলাচণ্ডী ব্রিজ, ডবল লাইন কে করেছে? একটা মিথ্যাবাদী লোক মোদি। শুধু মিথ্যা কথা বলে। একটা পয়সা রেলকে দেয়নি । আমি তো দু'লাখ কোটি টাকা শুধু মেট্রোরেল প্রজেক্টে দিয়েছি । প্রত্যেকটা প্রজেক্ট আমি করে দিয়েছি বাংলায় । এমনকি তারকেশ্বর পর্যন্ত । কত ট্রেন দিয়েছিলাম, রাজধানী, জন্মভূমি, কর্মভূমি, মাতৃভূমি । মনে পড়ে? আরাধনা, উপাসনা, বন্দনা । নরেন্দ্র মোদি কোনও আইডিয়া আছে? কয়েকটা ক্যাডার আপনার কানে কানে কী বলছে । আর আপনি কানে কানে সেই কথা শুনছেন । প্রধানমন্ত্রীর ক্রসচেক করে কথা বলা উচিত । ক্রস চেক না করে কথা বললে এর দায় আপনাকে নিতে হবে । মিথ্যা কথা বলার দায় আপনাকেই নিতে হবে । ব্যাঙ্কের টাকা লোকে পায়নি । কী করেছ পাঁচবছরে, আজ জবাব দিক । এটা মমতা ব্যানার্জির ইলেকশন নয় যে আপনি মমতা ব্যানার্জির কাছে কৈফিয়ত চাইবেন। আপনি পাঁচ বছর ধরে ছিলেন এর জবাব আপনাকেই দিতে হবে।"

দেখে নিন কী বললেন মমতা

এরপরই দর্শকদের উদ্দেশ্যে সভা থেকে তিনি বলেন, "পাঁচ বছরে শুধু বিদেশে ঘুরেছে বুঝলেন । 2 কোটি বেকারের চাকরি কেড়েছে । 10 কোটি বেকারকে চাকরি দেবে বলে দেয়নি। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে SBI সবাই বলছে বাই বাই । আমি বলি নরেন্দ্র মোদিকে আনল কে ? দেশটাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দিল ।" তারপরই বলেন, "ছোটো ছেলে-মেয়েরা গ্লাস ভাঙলে গালে চড় মেরে শাসন করেন। আর নরেন্দ্র মোদির মতো কোনও বড় খোকারা যদি দেশ ভাঙে তাহলে একটা ভোটের মাধ্যমে কষে দিতে হয় ।"

এরপরই নিজের কাজের খতিয়ান দেন তৃণমূল সুপ্রিমো । ক্ষমতায় আসার পর মানুষের জন্য কী কী করেছেন সেই হিসেবও দেন । তিনি বলেন, "28 হাজার বেড বেড়েছে হাসপাতালে । ন্যায্য মূল্যে অসুধের দোকান এছাড়াও আমরা একটা স্বাস্থ্য সাথী কার্ড করে দিচ্ছি । সাড়ে সাত কোটি মানুষের কাছে পৌঁছাবে । তাছাড়াও পরিবারে যারা মহিলা তার নামে একটা স্মার্ট কার্ড থাকবে । আরও পাঁচ লাখ টাকা করে স্বাস্থ্যসাথি স্কিমে তাদের বাড়ির লোকের জন্য প্রাইভেটে চিকিৎসা করাতে পারবেন । এবং যদি সে মহিলার বাবা মা বেঁচে থাকে তাহলে তাঁদের চিকিৎসাও এই টাকা থেকে করাতে পারবেন । অর্থাৎ পাঁচ লাখ টাকার একটা করে কার্ড সাড়ে সাত কোটি মানুষের কাছে । আমাদের রাজ্য সরকার কন্যাশ্রী দিচ্ছে মেয়েরা এক হাজার টাকা করে স্কলারশিপ দিচ্ছে । 18 বছর বয়স হলে যদি সে বিয়ে না করে পড়াশোনা করে তাহলে আরও 25 হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে । সে কলেজে পড়লে স্কলারশিপ পাচ্ছে । বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন পড়ছে, আর্স পড়ছে দু'হাজার আর সায়েন্স পড়লে আড়াই হাজার । সরকারি কলেজে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সব মেয়েরা আমার এখন কন্যাশ্রী । তারা কিন্তু স্কুল থেকে কলেজ, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সবটাই পড়ার জন্য স্কলারশিপ পাচ্ছে । তপশিলি ভাইবোনেরা, তারাও পড়াশোনার জন্য স্কলারশিপ পাচ্ছে । তাদের স্কলারশিপের নাম শিক্ষাশ্রী । তারা ক্লাস ফাইভ থেকে পায় । আদিবাসী ভাই-বোনেরাও পায় । সংখ্যালঘু ভাই-বোনেরাও পায় । তাদের দু'কোটি সাত লাখ ছেলে মেয়েরা স্কলারশিপ পেয়ছে । সিডিউল কাস্ট ছেলে মেয়েরা 64 লাখ পেয়েছে । কন্যাশ্রী মেয়েরা সাত লাখ আর এক কোটি ছেলে মেয়েদের আমরা বিনা পয়সায় সাইকেল দিয়েছি ।"

শিক্ষা এবং কন্যাশ্রীর কথা শেষ হলেই তিনি সোজা ঢুকে যান অন্য ক্ষেত্রে । সেখানে নিজের কাজের হিসেব দিতে গিয়ে তিনি দাবি করেন, "কেউ মারা গেলে যদি পোড়াতে না পারে বা কবর দিতে পাচ্ছে না। তার জন্যও আমরা দু'হাজার টাকা দিই । একটা বাচ্চা জন্মালে তার জন্যও টাকা দিই । এমন কিছু নেই যাতে আমরা করি না । সব বিষয়ে চেষ্টা করেছি । মানুষ যাতে কোনও অসুবিধায় না পড়ে । ঝড়ে জলে বাড়ি পড়ে যাচ্ছে, সেই বাড়ি সারিয়ে দেওয়া হচ্ছে । বিদ্যুতে কেউ মারা গেলে তাকে সাহায্য করা হচ্ছে । কৃষি জমি জলে ডুবে গেলে তাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে । একমাত্র আমাদের রাজ্যে কৃষকদের জন্য সব খাজনা মুকুব করে দেওয়া হয়েছে । এখানে কৃষিভাইরা আছেন, জানেন কৃষি জমিতে একবছর হল সব খাজনা মুকুব করে দেওয়া হয়েছে । কৃষি জমির জন্য কেউ খাজনা চাইলে দেবেন না । এছাড়াও নিউট্রিশন ফিস মুকুব করা হয়েছে কৃষি জমির জন্য । সম্পত্তি হস্তান্তর করতে গেলে সাধারণ পরিবারের কোনও নিউট্রিশন ফি লাগে না । শষ্য বিমা করে দিয়েছি কৃষকদের জমি যদি পোকায় নষ্ট করে দেয় । কৃষকদের টাকা আমরা দিচ্ছি । আমরা 900 কোটি টাকা দিয়েছি শষ্য বিমার জন্য । আপনারা এক টাকাও দেবেন না । আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে টাকা নিই না ।"

Last Updated : Apr 20, 2019, 11:27 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details