মুর্শিদাবাদে প্রাণ গেল কংগ্রেস কর্মীর খড়গ্রাম, 9 জুন: পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নের প্রথম দিনই অশান্তির ছবি ধরা পড়ল রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ৷ যেন 2018 সালের পুনরাবৃত্তি দেখা গেল শুক্রবার ৷ অশান্তির আঁচ থেকে রেহাই পেল না মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামও। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র জমার প্রথম দিনই ঝড়ল রক্ত ৷ গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল এক কংগ্রেস কর্মীর।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদ জেলার খড়গ্রাম থানার অন্তর্গত রতনপুর নলদীপ গ্রামে । পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম ফুলচাঁদ শেখ। এলাকায় কংগ্রেস কর্মী হিসাবেই পরিচিত ছিলেন ফুলচাঁদ ৷ গত দশ দিন আগে বাড়ি এসেছিলেন তিনি। কেরলে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কর্মরত ছিলেন ফুলচাঁদ। জানা গিয়েছে, তাঁর উপর রীতিমতো চাপ সৃষ্টি করছিল তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে কংগ্রেস দলের সঙ্গে যুক্ত থাকায়, দল বদলে তিনি রাজি হননি ৷ সরাসরি তিনি দল বদল করবেন না বলেও জানিয়ে দেন ফুলচাঁদ ৷ সেই থেকেই শুরু হয় আক্রোশ।
জানা গিয়েছে, এদিন সন্ধ্যায় বাড়ির কাছেই তাস খেলছিল ফুলচাঁদ। সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজনও ছিল। সেখানেই, ফুলচাঁদকে নিশানা করে তাঁর উপর অতর্কিতে হামলা চালায় ৷ ফুলচাঁদকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায় বলেও অভিযোগ। সঙ্গে লাঠী, ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি মারধর করা হয় বলেও জানায় স্থানীয়রা ৷ ঘটনায় ফুলচাঁদ-সহ আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন ৷ ফুলচাঁদের উপর হামলা করায় পরিবার ও প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। ফলে তাদের উপরও আঘাত আসে। ঘটনায় মোট তিনজন গুরুতর আহত হয়। প্রত্যেকেরই আঘাতে মাথা ফেটে যায় বলে জানা গিয়েছে। আহতরা জানিয়েছেন, ফুলচাঁদ বসে ছিল। হঠাৎ আক্রমণ করে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী। দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য ফুলচাঁদের উপর চাপ সৃষ্টি করছিল তৃণমূল। না মানায় শেষে হামলা করে তাঁর উপর।
আরও পড়ুন:পঞ্চায়েত ভোটের আবহেই অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে শুভেন্দু
ফুলচাঁদ শেখের গুলি লাগার পরই তাঁকে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। কান্দি বিধানসভার প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক জানান, যেভাবে হামলা করে তৃনমূলের কর্মীরা ফুলচাঁদকে খুন করা হয়েছে তা নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করে দোষীর শাস্তি চাওয়া হবে। গুরুত্ব না দিলে আন্দোলনে নামবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি ৷ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ঘটনার নিন্দা করে মুখ্যমন্ত্রীকেই দুষেছেন। নমিনেশন জারির প্রথম দিনে এমন ঘটনা হলে এখনও ভোট আসতে কী রূপ নেবে পরিস্থিতি, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।