পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

"শিষ্য" ডেভিড নয় মমতার বিরুদ্ধেই লড়তে চাই : অধীর - adhir chowdhuri

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই অধীর চৌধুরি নিজের বিরুদ্ধে প্রার্থী চান। বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন অপূর্ব সরকার। অধীর চৌধুরির হাত ধরে রাজ্য রাজনীতিতে অপূর্ব সরকারের হাতেখড়ি।

ফাইল ফোটো

By

Published : Mar 13, 2019, 8:53 AM IST

মুর্শিদাবাদ, ১৩ মার্চ : বহরমপুর লোকসভা নির্বাচনে গুরু-শিষ্যর লড়াই এবারের লোকসভা নির্বাচনে আলাদা মাত্রা এনে দেবে। গুরু অধীর চৌধুরি বহরমপুর কেন্দ্রে চারবারের সাংসদ। এই কেন্দ্রেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন শিষ্য অপূর্ব সরকার (ডেভিড)। গতকাল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতেই রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়েছে। যদিও জয়-পরাজয় নিয়ে জেলা থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া উঠে এসেছে। এবিষয়ে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি বলেন, "কংগ্রেস দলের যা কিছু উচ্ছিষ্ট, তা এখন তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পদ। তাই তৃণমূলকে মুর্শিদাবাদ জেলায় কংগ্রেসের উচ্ছিষ্টদের নিয়ে লড়তে হয়।"

অপূর্ব সরকার

অধীর চৌধুরির হাত ধরে রাজ্য রাজনীতিতে অপূর্ব সরকারের হাতেখড়ি। এলাকার মানুষের কাছে তিনি ডেভিড নামেই পরিচিত। ২০০১ সালে কান্দি পৌরসভার কাউন্সিলর হন। ২০০৬ সালে অধীর চৌধুরি কংগ্রেস হাইকমান্ডের বিরোধিতা করে তাঁকে কান্দির কংগ্রেস প্রার্থী অতীশ সিংহের বিরুদ্ধে বিধানসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে দাঁড় করান। অপূর্ব সরকার কুড়ুল চিহ্নে ২,৬৩২ ভোটে জিতে বিধানসভার দরজা পার করেন। ২০১১ সালে জয়ের ব্যবধান হয় ৭,৮১০। আর ২০১৬ সালে সেই ব্যবধান বেড়ে ২০,৭৮০ হয়। এরপর ২০১৮ সালে কংগ্রেসের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা না দিয়েই তিনি তৃণমূল কংগ্রসে যোগ দেন। ফলে এবার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েই তাঁকে লোকসভা নির্বাচনে লড়তে হচ্ছে।

লোকসভা নির্বাচনে তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের প্রতীকে লড়ার সম্ভাবনা তাঁরই এক সময়ের রাজনৈতিক গুরু অধীর চৌধুরির। ২০১৪ সালে অধীর লোকসভা নির্বাচনে ৩,৫৬,৫৬৭ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। রাজ্যে এটাই ছিল রেকর্ড জয়। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, অধীর চৌধুরির বিরুদ্ধে অপূর্ব সরকার কার্যত চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়েছেন।

জেলা তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, "২০১৪ সালের পর এই জেলায় অনেক রাজনৈতিক পালাবদল হয়েছে। অধীরের শক্ত ভিত গুড়িয়ে আমরা তাঁর পায়ের তলার মাটি কেড়ে নিয়েছি। ফলে এবারেই অধীর রাজনৈতিকভাবে উৎখাত হতে চলেছেন।"

জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, "অধীর চৌধুরির নাম এই জেলায় এখনও উজ্জ্বল রয়ে রয়েছে। ভোট বাক্সই তার প্রমাণ দেবে। অপূর্ব সরকারকে প্রার্থী করায় তৃণমূলের দৈন্যদশা ফুটে উঠেছে।"

অপূর্ব সরকার বলেন, "অধীর চৌধুরির বিরুদ্ধে আমাকে যোগ্য মনে করায় মুখ্যমন্ত্রী আর শুভেন্দু অধিকারীকে কৃতজ্ঞতা জানাই। আশা করি মা মাটি মানুষের উন্নয়নে সামিল হতে পারব।"

অধীর চৌধুরি বলেন, "এবিষয়টি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা বলে মনে করি। নির্বাচনে যে কেউ দাঁড়াতে পারে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীদের মধ্যে দুজন আজও কংগ্রেসের বিধায়ক পদে রয়েছেন। এই বিষয়ের মধ্যে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের দ্বিচারিতা প্রমাণিত হয়েছে। আমি চেয়েছিলাম বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী হন। আমি তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। এখনও সময় আছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কেন্দ্রে আমাকে হারাতে পারলে রাজনীতি করা ছেড়ে দেব। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে লড়তে চাই।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details