মালদা, 28মার্চ : ভোটের মুখে গতকাল মাঝরাতে ঘরে ঢুকে এক যুবককে গুলি করে খুন করার ঘটনায় উত্তপ্ত হরিশ্চন্দ্রপুরের খিদিরপুর গ্রাম। মৃতের নাম পাতানু মণ্ডল। অন্যদিকে ওই যুবককে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করেছে BJP। আজ সকালে ঘটনাস্থানে রওনা দিয়েছেন BJP জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র। যদিও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক যোগ নেই। পুরোনো শত্রুতার জেরে এই ঘটনা।
স্ত্রীর প্রাক্তন স্বামীর হাতে খুন ব্যক্তি; "দলীয় কর্মী", দাবি BJP-র
মালদার খিদিরপুরে যুবককে গুলি করে খুন। তার রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা।
পাতানুর বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের দৌলতনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বটতল্লি গ্রামে। আগে পাতানু হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে নিযুক্ত ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে মহিলাঘটিত একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সেই কারণে ২০১৬ সালে তাঁকে সিভিক ভলান্টিয়ার থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর কাকাতো দাদা দৌলতনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের BJP সদস্য। সেই কারণেই এই খুনের ঘটনায় চড়তে শুরু করেছে রাজনৈতিক রং।
২০১৬ সালের অগাস্ট মাসে ওই এলাকায় ভয়াবহ বন্যার জল ঢুকতে শুরু করে। সেইসময় সুযোগ পেয়ে এক বিধবা মহিলার ঘরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করেন পাতানু। এই ঘটনায় সেই বছরের ১০ অগাস্ট পাতানুর বিরুদ্ধে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। এরপর পাতানুকে সিভিক ভলান্টিয়ার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বছর দেড়েক আগে পাতানু এলাকার এক বিবাহিতা মহিলাকে বিয়ে করেন। তারপর থেকে তিনি রুমা মণ্ডল নামে ওই মহিলার সঙ্গেই থাকতেন।
গতকাল রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ঘরের ভিতরে মাথার পিছন দিকে গুলি করা হয় পাতানুকে। গুলি লাগে মাথার পিছনদিকে ঘাড়ের সংযোগস্থানে। ঘটনাস্থানেই মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে রাত দেড়টা নাগাদ ঘটনাস্থানে পৌঁছায় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। পাতানুর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশে দায়ের করা অভিযোগপত্রে রুমাদেবী জানিয়েছেন, গতকাল রাতে আততায়ী ঘরের ভিতর ঢুকে পড়েছিল। তাদের মধ্যে একজনকে তিনি চিনতে পেরেছেন। তাঁর নাম সুমিত মণ্ডল ওরফে দীনেশ। উল্লেখ্য, এই দীনেশ মণ্ডলই রুমার প্রাক্তন স্বামী। তিনি বিমা কম্পানির এজেন্ট। গৃহশিক্ষকও ছিলেন।
এদিকে নিহত পাতানুকে আজ নিজেদের কর্মী বলে দাবি করেছেন BJP-র জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র। এই মুহূর্তে তিনি খিদিরপুরের পথে। ফোনে জানিয়েছেন, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে পাতানুর সাংগঠনিক শক্তিতে তাঁরা দৌলতনগর আসনে নিজেদের প্রার্থীকে জেতাতে পেরেছিলেন। রাজনৈতিক কারণেই গতকাল রাতে পাতানুকে খুন করা হয়েছে। তবে কোন রাজনৈতিক দল এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তা নিয়ে এখনও কোনও অভিযোগ করেননি তিনি।