মালদা, 20 মে : মালদায় 100 দিনের কাজে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল খোদ সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন গ্রামবাসীরা। অভিযোগ পেয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলার প্রশাসনিক প্রধান রাজর্ষি মিত্র। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) বৈভব চৌধুরীর নেতৃত্বে শুরু হয় সেই তদন্ত। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে (Malda DM Suspended three government employees) ।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি মানিকচক ও রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে 100 দিনের কাজ প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। শুধু রাজনৈতিক লোকজন নয়, এই দুর্নীতিতে নাম জড়ায় বেশ কিছু সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন উপভোক্তাদের একাংশ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়ে জেলাশাসক রতুয়া 1 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের গ্রাম রোজগার সহায়ক মানিক আলম, ওই ব্লকেরই কাহালা গ্রাম পঞ্চায়েতের গ্রাম রোজগার সহায়ক মহম্মদ রাহত আনসারি ও মানিকচক ব্লকের টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট চৈতালি মণ্ডলকে বরখাস্ত করেছেন। পাশাপাশি বাহারাল ও রতুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সেক্রেটারি, এগজিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং নির্মাণ সহায়কের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন :গ্রীষ্মের বৃষ্টিতে কয়েক হাজার বিঘার পাকা বোরোধান জলের নীচে, মাথায় হাত চাষিদের
এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এ নিয়ে বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে গত 12 বছর ধরে তৃণমূল 100 দিনের কাজ প্রকল্পকে পার্টি ফান্ড হিসাবে ব্যবহার করছে। এরা পুকুর চুরি করছে। এই চুরিতে তৃণমূলের উপর থেকে নীচ পর্যন্ত সবাই যুক্ত। ওই দলের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাও এর সঙ্গে জড়িত। শুধু তাই নয়, শাসকদলের নির্দেশে সরকারি আধিকারিকদের একাংশও জড়িত। তাঁরা এর সঙ্গে যুক্ত না থাকলে এত দুর্নীতি হয় না।" তিনি আরও বলেন, "শুধু 100 দিনের কাজ নয়, প্রতিটি সরকারি প্রকল্পেই সরকারি আধিকারিকদের একাংশ জড়িত। আমরা এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করব।"
তিন সরকারি কর্মীকে বরখাস্ত মালদার জেলাশাসকের এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীও। তিনি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলছেন, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন চান তিনি। কিন্তু তারপরেও কিছু মানুষ সরকারি কাজ অবহেলা করে ব্যক্তিগত স্বার্থে প্রশাসনকে কাজে লাগাচ্ছেন। অভিযোগ পেয়ে প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিয়েছে। এটা খুব ভাল সিদ্ধান্ত। আসলে দীর্ঘদিন ধরে এদের দৌরাত্ম্য এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে সেটা সহ্যের বাইরে চলে গিয়েছে। তার ফল অবশেষে তারা পেয়েছে।"
আরও পড়ুন :1 জুন থেকে রাজ্যে বন্ধ 51 মাইক্রনের নীচে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ, সংকটে ব্যবসায়ীরা!
তিনি আরও বলেন, "এতে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নই বাস্তবায়িত হয়েছে বলে আমি মনে করি। এই ঘটনার সঙ্গে দলের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনের কেউ জড়িত থাকলে তারাও বাদ যাবে না ৷ আর কথায় কথায় সিবিআই করে লাভ নেই। সিবিআই ক'টা মামলায় চার্জশিট জমা দিয়ে দোষীদের শাস্তি দিতে পেরেছে?"