মালদা, ১৭ মে : হাওড়ায় আইনজীবীদের উপর পুলিশি অত্যাচার হয়েছে । এই অভিযোগ তুলে টানা ২২ দিন ধরে কর্মবিরতি পালন করছেন মালদা জেলা আদালতের আইনজীবীরা । তাঁদের এই কর্মবিরতিতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সমস্যায় পড়েছেন বহু বিচারাধীন বন্দী । এমন কী সমস্যায় পড়েছে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষও । যদিও আইনজীবীরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকার উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে তাঁদের কর্মবিরতি বহাল থাকবে ।
এখনও মেলেনি বিচার, আইনজীবীদের কর্মবিরতি পড়ল ২২ দিনে - break in service
পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ তুলে টানা ২২ দিন কর্মবিরতি পালন করছেন মালদা জেলা আদালতের আইনজীবীরা। সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ ও বহু বিচারাধীন বন্দী ।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২৪ এপ্রিল । গাড়ি পার্কিংকে কেন্দ্র করে হাওড়া পৌরনিগমের কর্মী ও হাওড়া আদালতের আইনজীবীদের একাংশের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে । পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ । কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগ করা হয় । এরপরই পুলিশি মারধরের প্রতিবাদে ও দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি তুলে রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতি শুরু করেন আইনজীবীরা । মালদা জেলা আদালতেও সেই ছবি ধরা পড়ে । শুরু হয় একটানা কর্মবিরতি । প্রতিদিনই মালদা জেলা আদালত চত্বর সুনসান থাকছে । আইনজীবীদের এই কর্মবিরতিতে সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে বিচারাধীন বন্দী সকলেই । সমস্যায় পড়েছে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষও । সংশোধনাগার সূত্রে খবর, গত ২২ দিন ধরে আইনজীবীরা কর্মবিরতি পালন করায় বহু মামলা জমা পড়ে রয়েছে । দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে বন্দীদের সংখ্যা । এই মুহূর্তে সংশোধনাগারে বন্দীদের ধারণ ক্ষমতার থেকে প্রায় দেড়গুণ বন্দী রয়েছেন মালদা জেলা সংশোধনাগারে ।
আজ মালদা জেলা আদালত চত্বরে রাজ্য সরকারের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে ব্ল্যাক-ডে পালন করেন আইনজীবীরা । জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবকিশোর মজুমদার বলেন, "ওয়েস্টবেঙ্গল বার কাউন্সিলের নির্দেশে আজ আমরা ব্ল্যাক-ডে পালন করছি । গত ২২ দিন ধরে আমাদের এই কর্মবিরতি চলছে । আপাতত ২১ মে পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে । আইনজীবীদের কর্মবিরতিতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হচ্ছে । কিন্তু আইনজীবীদের উপর পুলিশের এই নির্যাতন হলে সাধারণ মানুষের আরও খারাপ অবস্থা হবে ।" কিন্তু এই কর্মবিরতিতে জেলার সংশোধনাগারে বিচারাধীন বন্দীর সংখ্যা যে দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে ? এই প্রসঙ্গে দেবকিশোরবাবু বলেন, "এটা আমাদের ব্যর্থতা নয় । যাদের এটা কর্তব্য, তাঁরা যদি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতেন, তবে এই পরিস্থিতি তৈরি হত না । যতদিন না আমাদের দাবি পূরণ হবে, ততদিন আমাদের কর্মবিরতি চলবে ।"