মালদা, 12 মে : চাঁচল 1 এর পাশের ব্লক অর্থাৎহরিশ্চন্দ্রপুর 1 ব্লক , এককথায় হয়ে উঠেছে জেলার কোরোনা হাব ৷ এখনও পর্যন্ত হরিশ্চন্দ্রপুর 1 ব্লকে মিলেছে 12 জন কোরোনা পজ়িটিভের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতকে মাথায় রেখে বিশেষভাবে সতর্ক হয়েছে চাঁচল 1 ব্লক প্রশাসন ৷ ব্যবসায়ীদের আপত্তি থাকলেও প্রশাসনের নির্দেশে ,আজ খোলা মাঠে বসেছে বাজার ৷ প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে চাঁচলবাসী ৷ পাশাপশি ইদের আগে কাপড়ের দোকানে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে প্রশাসনকে কড়া হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে সকলেই ৷
কোরোনা মোকাবিলায় গত 48 দিন ধরে লকডাউন চললেও চাঁচলের বাজার বসত নির্দিষ্ট এলাকাতেই ৷ পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই বাজারে উপস্থিত মানুষজনকে শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় রাখার আবেদন জানানো হলেও জায়গার অভাবে তা মেনে চলা যায়নি ৷ কিন্তু এরই মধ্যে পাশের হরিশ্চন্দ্রপুর 1 ব্লকে মেলে 12 জন কোরোনা রোগীর সন্ধান ৷ তাই আজ সকালে সতর্কতা হিসাবে চাঁচল বাজার সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ব্লক প্রশাসন ৷ সব ব্যবসায়ীদের পাঠানো হয়েছে চাঁচল স্টেডিয়ামে ৷ যদিও প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা ৷
বিষয়টি নিয়ে এক সবজি ব্যবসায়ী রেজাউল করিম বলেন, “প্রতিদিনের মতো আজ সকালে যখন বাজারে দোকান বসাতে আসি, তখন পুলিশের গাড়ি ঢোকে ৷ পুলিশ জানায়, ওখানে দোকান বসানো যাবে না ৷ চাঁচল স্টেডিয়ামে দোকান বসাতে হবে ৷ এখানে যখন আসি, তখন স্থানীয় মানুষজন বলে, এখানে তারা দোকান লাগাতে দেবে না ৷ রাস্তা বন্ধ করে দেবে ৷ আমরা সেকথা পুলিশকে জানাই ৷ পুলিশ আশ্বাস দিয়ে বলে, রাস্তা বন্ধ করা হবে না ৷ তারপরই আমরা এখানে দোকান বসাই ৷ প্রথমে পুলিশ বলেছিল, মাঠে কোনও প্লাস্টিক টাঙাতে দেওয়া হবে না ৷ রোদেই দোকান করতে হবে ৷ পরে বলল, মাঠের চারপাশে প্লাস্টিক টাঙানো যাবে ৷ তবে মাঠের মধ্যে প্লাস্টিক টাঙানো যাবে না ৷ এভাবে আমাদের হেনস্তা করছে প্রশাসন ৷ এখন রমজান মাস চলছে ৷ আমরা রোজার উপোস করেছি ৷ এই অবস্থায় চড়া রোদে দোকান করা যায়? এদিকে এখানে ব্যবসাও হচ্ছে না৷ সকাল থেকে বিক্রি বলতে কিছু হয়নি৷ কী করব, জানি না৷”
যদিও প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন চাঁচলের বাসিন্দা সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায় ৷ চাঁচল কলেজের শিক্ষক সুরজিতবাবু বলেন, “প্রশাসনের বাজার সরানোর উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি ৷ তবে আমি মনে করি, এটা আরও আগে করা উচিত ছিল ৷ তাহলে মানুষ যেমন আরও বেশি সচেতন হত, তেমনই কোরোনার বিপদ থেকে আরও দূরে থাকা যেত ৷ আজ বাজারে গিয়ে যে ছবি দেখেছি, এটাই প্রকৃত লকডাউনের চিত্র ৷ ”
বাজার সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে চাঁচল 1-এর BDO সমীরণ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “কোরোনা সংক্রমণ যাতে ছড়াতে না পারে তার জন্যই আজ থেকে চাঁচলের বাজারের স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে ৷ সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী শুধুমাত্র স্ট্যান্ড অ্যালোনে থাকা কাপড়ের দোকান খোলা থাকছে ৷ সেখানে সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলার জন্য সবাইকে বলা হয়েছে ৷ পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সেখানে নজরদারি চলছে ৷”