পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

মালদায় ভোটের জন্য কাশ্মীর থেকে আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে - kashmir

শুক্রবার মালদায় এসেছেন বিবেক দুবে । তারপরেই মালদা জেলার পুলিশ সুপার পদ থেকে অর্ণব ঘোষকে অপসারণ করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অজয় প্রসাদকে ।

বিবেক দুবে

By

Published : Apr 22, 2019, 2:56 AM IST

Updated : Apr 22, 2019, 5:45 AM IST

মালদা, ২২ এপ্রিল : মালদা জেলার ৯২ শতাংশ বুথে থাকছে কেন্দ্রীয়বাহিনী । গতকাল সর্বদলীয় বৈঠকের পর একথা জানালেন নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে । ২৩ এপ্রিল মালদা উত্তর ও দক্ষিণ কেন্দ্রে ভোট ।

দেখুন ভিডিয়ো

শুক্রবার মালদায় এসেছেন বিবেক দুবে । তারপরেই মালদা জেলার পুলিশ সুপার পদ থেকে অর্ণব ঘোষকে অপসারণ করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অজয় প্রসাদকে । জানা গেছে, মালদার জন্য প্রথমে ৮৯ কম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার কথা থাকলেও পরবর্তীতে আরও ১৮ কম্পানি আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন । এই কম্পানি আসছে কাশ্মীর থেকে ।

এদিকে, অর্ণব ঘোষের SP পদ থেকে অপসারণের পরেই মালদায় একধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গেছে স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা । এই জেলার ২৮৭৫টি বুথের মধ্যে ২৫১২টি বুথকেই স্পর্শকাতর হিসাবে চিহ্নিত করেছে জেলা প্রশাসন ।
গতকাল মালদায় নতুন সার্কিট হাউজ়ে বিবেক দুবে সর্বদলীয় বৈঠক করেন । বৈঠক শেষে মালদা উত্তর কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী ইশা খান চৌধুরি বলেন, "নির্বাচন কমিশনের দুটি পদক্ষেপের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ । প্রথমত, মালদা জেলার প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে, এতে মানুষের আশা বেড়ে গিয়েছে । দ্বিতীয়ত, নির্বাচন কমিশন কংগ্রেসের দাবি মেনে পুলিশ সুপারকে অপসারণ করেছে । গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুলিশের ভূমিকা কী ছিল তা সকলের জানা । এই পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের অধীনে স্ট্রংরুমে ব্যালটবক্স লুট হয়েছে । পঞ্চায়েত নির্বাচনকে নির্বাচন না বলে লুট বলা চলে । আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রশ্ন তুলেছিলাম, পঞ্চায়েত নির্বাচনে মালদায় এত রিগিংয়ের পরেও লোকসভা নির্বাচনে কীভাবে পুলিশ সুপার ও জেলাশাসককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ? আজ বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবের কাছে আমরা দাবি রেখেছি, অবিলম্বে মালদার জেলাশাসককেও অপসারণ করতে হবে । মালদা জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে যেসব দুষ্কৃতী ভোট লুট করেছে, তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে । আমি উত্তর মালদা কেন্দ্রের প্রার্থী, সাধারণ মানুষ আমার কাছে অভিযোগ করেছেন এই সব দুষ্কৃতীরা তাঁদের প্রতিনিয়ত ভয় দেখাচ্ছে । এই সব দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার না করা হলে মানুষ ঠিকঠাক ভোট দিতে পারবে না । গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই দুষ্কৃতীরা প্রশাসনের সহযোগিতায় ভোট লুট করেছে । ভোটের সময় এদের আটকালে মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে ।"

CPI(M)-এর মালদা জেলা সভাপতি অম্বর মিত্র বলেন, "আমরা ১০০ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি করেছি । কারণ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের সহযোগিতায় যেভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করা হয়েছিল, তা আমরা তাঁকে জানিয়েছি । পঞ্চায়েত ভোটের গন্ডগোলের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আমরা অনুরোধ করেছি । প্রতিটি গ্রামে যাতে আজ থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী রুট মার্চ শুরু করে মানুষের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করে, তা দেখতে বলেছি। জেলার যে সমস্ত দুষ্কৃতীরা ভোট লুট করতে প্রশাসনকে সাহায্য করছে, তাদের নাম-পরিচয় পর্যবেক্ষককে দিয়েছি। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন পঞ্চায়েত ভোটের ছবি লোকসভা নির্বাচনে দেখা যাবে না । মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে তার ব্যবস্থা তাঁরা করবেন । গত ১৫ মার্চ থেকে আমরা মালদার পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের অপসারণের দাবি তুলেছি ।"

BJP নেতা সুব্রত কুণ্ডু বলেন, "মালদা জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেও তাদের দিয়ে রুট মার্চ করানো হচ্ছে না । তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাদের খাওয়ানো হচ্ছে । এসব জানিয়ে আমরা সমস্ত বুথ সংলগ্ন এলাকায় রুট মার্চ করানোর দাবি বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষকে জানিয়েছি । সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় দুষ্কৃতীরা ভোটারদের হুমকি দিচ্ছে । অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছি ।

এদিকে জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এই জেলার জন্য ৮৯ কম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আগেই পাওয়া গিয়েছিল । নতুন করে কাশ্মীর থেকে আরও ১৮ কম্পানি বাহিনী আসছে । জেলার ৯২ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে । বাকি বুথগুলিতে থাকবে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ । যে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে না সেখানে থাকবে মাইক্রো অবজারভার, ওয়েবকাস্টিং ব্যবস্থা, CCTV অথবা ভিডিয়ো ফটোগ্রাফির ব্যবস্থা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মালদা উত্তর কেন্দ্রের ১৭১৩টি বুথের মধ্যে ১৫২০টিতে থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী । এই জেলায় মালদা দক্ষিণ কেন্দ্রের ১১৬২টির মধ্যে ৯৯২টি বুথে থাকছে কেন্দ্রীয়বাহিনী । সব থেকে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে সুজাপুর, মোথাবাড়ি ও বৈষ্ণবনগর বিধানসভা কেন্দ্রে। সুজাপুরে ২৩৩টির মধ্যে ২১৯টিতে, মোথাবাড়িতে ১৮৭টির মধ্যে ১৪৭টিতে এবং বৈষ্ণবনগরে ২৩৫টির মধ্যে ২১৮টিতে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী।

Last Updated : Apr 22, 2019, 5:45 AM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details