মালদা, 7 জুন : বছর কয়েক আগের কথা ৷ নুর আলম ও অঞ্জলি খাতুনের ঘরে এল ফুটফটে কন্যাসন্তান ৷ সাধ করে তাঁরা মেয়ের নাম রাখলেন নুর ফতেমা ৷ সারা ঘর জুড়ে খেলে বেড়াত মেয়েটি ৷ কলকল করে কত কথা একরত্তির ৷ দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারটি দারিদ্র ভুলে গিয়েছিল ছোট্ট মেয়েটির দিকে তাকিয়ে ৷ কিন্তু বছর তিনেক আগে থেকে সব আস্তে আস্তে বদলাতে শুরু করল ৷ অকেজো হয়ে গেল মেয়েটির হাত-পা ৷ এর কিছুদিনের মধ্যেই বাকশক্তিও হারাল সে ৷ নিজেদের সাধ্যের মধ্যে থেকে যতদূর যাওয়া যায় , গিয়েছে পরিবারটি ৷ কিন্তু এখন তাঁরা অসহায় ৷ এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে মেয়ের প্রাণ ভিক্ষা করছেন পরিবারের লোকজন ।
হরিশ্চন্দ্রপুর 2 ব্লকের সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছত্রক গ্রামের বাসিন্দা নুর সালাম । ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি ৷ করোনা আবহে কাজ হারিয়ে কয়েক মাস আগে বাড়ি ফিরে এসেছেন । বর্তমানে জমিতে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করেন। নুর সাহেবের স্ত্রী অঞ্জলি খাতুন গৃহবধূ। পরিবারের দাবি, স্থানীয় চিকিৎসকরা ফতেমার রোগ নির্ণয় করতে পারছেন না । ফতেমাকে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরে চাঁচলে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় । কিছু ওষুধ লিখে দিয়ে মেয়েকে বেঙ্গালুরু নিয়ে যেতে বলে । কিন্তু কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করে মেয়ের চিকিৎসা করানো সম্ভব নয় । অন্যদিকে দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে আবেদন করেও মেলেনি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড । এই পরিস্থিতিতে চোখে জল নিয়েই শিশুকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে যেতে দেখছেন পরিবারের সদস্যরা ৷ কিন্তু তাঁদের হাত-পা বাঁধা ৷
অঞ্জলি খাতুন বলেন, “এক বছর আগে থেকে মেয়ের হাত-পা অকেজো হয়ে গিয়েছে। কথাটাও বলতে পারে না । মেয়ের চিকিৎসার জন্য প্রথমে হরিশ্চন্দ্রপুর পরে চাঁচলে গিয়েছিলাম । ডাক্তাররা মেয়ের রোগ নির্ণয় করতে পারছেন না । শুধু ওষুধ লিখে দিয়ে বেঙ্গালুরু নিয়ে যেতে বলেছেন । আমরা দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার। কীভাবে কয়েক লাখ টাকা খরচ করে মেয়ের চিকিৎসা করাব ?”