পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

টাকা নেই, বন্ধ মেয়ের চিকিৎসা; মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কাতর প্রার্থনা পরিবারের - familly wants mamata banerjee's help in malda

স্থানীয় চিকিৎসকরা ফতেমার রোগ নির্ণয় করতে পারছেন না । ফতেমাকে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরে চাঁচলে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় । কিছু ওষুধ লিখে দিয়ে মেয়েকে বেঙ্গালুরু নিয়ে যেতে বলে । কিন্তু কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করে মেয়ের চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়ে উঠছে না মালদার নুর-অঞ্জলির ।

মেয়ের চিকিৎসার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কাতর প্রার্থনা পরিবারের
মেয়ের চিকিৎসার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কাতর প্রার্থনা পরিবারের

By

Published : Jun 7, 2021, 8:19 AM IST

Updated : Jun 7, 2021, 9:15 AM IST

মালদা, 7 জুন : বছর কয়েক আগের কথা ৷ নুর আলম ও অঞ্জলি খাতুনের ঘরে এল ফুটফটে কন্যাসন্তান ৷ সাধ করে তাঁরা মেয়ের নাম রাখলেন নুর ফতেমা ৷ সারা ঘর জুড়ে খেলে বেড়াত মেয়েটি ৷ কলকল করে কত কথা একরত্তির ৷ দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারটি দারিদ্র ভুলে গিয়েছিল ছোট্ট মেয়েটির দিকে তাকিয়ে ৷ কিন্তু বছর তিনেক আগে থেকে সব আস্তে আস্তে বদলাতে শুরু করল ৷ অকেজো হয়ে গেল মেয়েটির হাত-পা ৷ এর কিছুদিনের মধ্যেই বাকশক্তিও হারাল সে ৷ নিজেদের সাধ্যের মধ্যে থেকে যতদূর যাওয়া যায় , গিয়েছে পরিবারটি ৷ কিন্তু এখন তাঁরা অসহায় ৷ এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে মেয়ের প্রাণ ভিক্ষা করছেন পরিবারের লোকজন ।

হরিশ্চন্দ্রপুর 2 ব্লকের সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছত্রক গ্রামের বাসিন্দা নুর সালাম । ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি ৷ করোনা আবহে কাজ হারিয়ে কয়েক মাস আগে বাড়ি ফিরে এসেছেন । বর্তমানে জমিতে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করেন। নুর সাহেবের স্ত্রী অঞ্জলি খাতুন গৃহবধূ। পরিবারের দাবি, স্থানীয় চিকিৎসকরা ফতেমার রোগ নির্ণয় করতে পারছেন না । ফতেমাকে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরে চাঁচলে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় । কিছু ওষুধ লিখে দিয়ে মেয়েকে বেঙ্গালুরু নিয়ে যেতে বলে । কিন্তু কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করে মেয়ের চিকিৎসা করানো সম্ভব নয় । অন্যদিকে দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে আবেদন করেও মেলেনি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড । এই পরিস্থিতিতে চোখে জল নিয়েই শিশুকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে যেতে দেখছেন পরিবারের সদস্যরা ৷ কিন্তু তাঁদের হাত-পা বাঁধা ৷

মেয়ের চিকিৎসার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কাতর প্রার্থনা পরিবারের

অঞ্জলি খাতুন বলেন, “এক বছর আগে থেকে মেয়ের হাত-পা অকেজো হয়ে গিয়েছে। কথাটাও বলতে পারে না । মেয়ের চিকিৎসার জন্য প্রথমে হরিশ্চন্দ্রপুর পরে চাঁচলে গিয়েছিলাম । ডাক্তাররা মেয়ের রোগ নির্ণয় করতে পারছেন না । শুধু ওষুধ লিখে দিয়ে বেঙ্গালুরু নিয়ে যেতে বলেছেন । আমরা দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার। কীভাবে কয়েক লাখ টাকা খরচ করে মেয়ের চিকিৎসা করাব ?”

আরও পড়ুন :অন্তর্দেশীয় বিমান পরিবহনে শিথিল হতে পারে কড়াকড়ি

স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শেখ আসমাউল হক বলেন, "এঁদের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। লকডাউনের আগে এঁরা বাইরে শ্রমিকের কাজ করত। লকডাউনে কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। এখন মাঠে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করে দিন কাটাচ্ছে ওই পরিবার। ফাতেমার খুবই জটিল রোগ দেখা দিয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল এলাকার প্রায় সমস্ত ডাক্তারকে দেখানো হয়েছে। কিন্তু কোনও ডাক্তার ওই রোগ নির্ণয় করতে পারেননি। পরে কোনও এক ডাক্তার ফাতেমাকে বেঙ্গালুরু নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু যে পরিবার দিনের খাবার যোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে, তাঁরা এত টাকা ব্যয় করে কীভাবে মেয়েকে চিকিৎসা করাতে বেঙ্গালুরু নিয়ে যাবে। দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদনও করেছিল ওই পরিবারটি। কিন্তু কার্ড তো দুরস্ত, কার্ডের জন্য স্লিপটাও পায়নি তাঁরা ।"

হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের বিডিও পার্থ দাস বলেন, “সংবাদমাধ্যমের থেকে বিষয়টি জানতে পেরেছি । এই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। যখন পুনরায় স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ক্যাম্প বসবে তখন ওনাদের কার্ড করে দেওয়া হবে। ফাতেমার রোগ নিয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই পরিবারকে সমস্তরকম সাহায্য করা হবে।”

Last Updated : Jun 7, 2021, 9:15 AM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details