মালদা, 24 এপ্রিল : বন্ধ জলসাঘরের বারান্দায় ঝুঁকে পড়েছিল একটি বৃদ্ধ শরীর ৷ হাতে দীর্ঘদিনের পুরোনো একটি বেহালা ৷ পরম যত্নে সেই যন্ত্রের বিভিন্ন অংশ ঠিক করে যাচ্ছিলেন ৷ মাঝেমধ্যেই বাজাচ্ছিলেন হিন্দি বা বাংলা গানের এক, দু'কলি । সুরের মূর্ছনা ছড়িয়ে পড়ছিল চারদিকে ৷ কিন্তু এ সুর শোনার লোক কই ৷ লকডাউনে সকলেই তো গৃহবন্দী । উপার্জনের আশায় বের হলেও তাই জুটছে না কিছু । পাননি লোকশিল্পী ভাতা । ফলে পাঁচ জনের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন বৃদ্ধ ৷
নাম ভগবান মালি । বয়স 71 ৷ মালদা শহরের বালুচর এলাকায় বাড়ি ৷ পাঁচজনের সংসার ৷ ছেলে তেমন কিছু করে না ৷ ভগবান ছোটো বেলায় বাবার কাছে বেহালার ছড় টানতে শিখেছিলেন ৷ এখন সেটাই তাঁর রুজি রোজগার ৷ সকাল হলে বেহালা হাতে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন ৷ কখনও শহরে, কখনও বা শহরের বাইরে ৷ যেখানে লোকজনের জমায়েত বেশি, সেখানে মূর্ছনা তোলেন হাতের যন্ত্রে ৷ যন্ত্রীর দক্ষতায় যেন কথা পায় যন্ত্র ৷ বাংলা কিংবা হিন্দি, একের পর এক গানের সুর মুগ্ধ করে শ্রোতাদের ৷ কখনও কখনও অনুষ্ঠানেও ডাক পান ৷ সেখান থেকেও কিছু আয় হয় ৷ কিন্তু আর পাঁচটা দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের মতো কোরোনা কেড়ে নিয়েছে তাঁর আয়ও ৷ বয়সের কারণে তিনি নিজেও কোরোনা নিয়ে আতঙ্কিত ৷ খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হন না ৷ কিন্তু পেটের তাগিদে আতঙ্ক সঙ্গে নিয়েই বেরিয়েছিলেন কিছু উপার্জনের আশায় ।