মালদা, 28 জানুয়ারি : সরকারি নির্দেশিকা ছিল যে প্রত্যেক কৃষক প্রতি পর্যায়ে সর্বাধিক 30 কুইন্টাল ধান সরকারি সহায়ক মূল্যে ব্লকের কিষান মান্ডিতে বিক্রি করতে পারবেন৷ একজন কৃষক বছরে সর্বাধিক 90 কুইন্টাল ধান শিবিরে বিক্রি করতে পারেন৷ সেই অনুযায়ী আজ, বৃহস্পতিবার সকালে ৩০ কুইন্টাল করে ধান নিয়ে পুরাতন মালদার কিষান মান্ডিতে উপস্থিত হন অনেক কৃষক৷ কিন্তু মান্ডিতে এসে তাঁরা জানতে পারেন, আর 30 কুইন্টাল নয়৷ প্রতি পর্যায়ে একজন কৃষক সরকারি শিবিরে সর্বাধিক 10 কুইন্টাল ধান বিক্রি করতে পারবেন৷
কিন্তু নয়া নির্দেশিকার বিষয়ে আগে কাউকে কিছু জানানো হয়নি৷ এনিয়ে ক্ষোভ ছড়ায় উপস্থিত কৃষকদের মধ্যে৷ তাঁদের বিক্ষোভে বন্ধ হয়ে যায় ধান কেনাবেচার কাজ৷ উত্তেজনা ছড়ায় সরকারি মান্ডিতে৷ শেষ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিক ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়৷ প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয়, নয়া নির্দেশিকার কোনও প্রচার না থাকায় আজ একেকজন কৃষক সর্বাধিক 30 কুইন্টাল ধান বিক্রি করতে পারবেন৷ তবে আগামিকাল থেকে একেকজন কৃষকের কাছ থেকে 10 কুইন্টালের বেশি ধান কেনা হবে না৷
উল্লেখ্য, চলতি বছর সরকারি শিবিরে প্রতি কুইন্টাল ধানের দর ধার্য হয়েছে 1868 টাকা৷ এর সঙ্গে শিবিরে ধান নিয়ে আসার খরচ হিসাবে প্রতি কুইন্টালে চাষিদের দেওয়া হবে আরও 20 টাকা৷ খোলাবাজার থেকে বেশি দাম থাকায় চাষিরা সরকারি শিবিরগুলিতেই ধান বিক্রি করতে চান৷ বর্তমানে আমন ধান কেনাবেচার মরশুম চলছে৷ ফলে প্রতিদিনই চাষিরা নিজেদের ব্লকের কিষান মান্ডিতে উৎপাদিত ধান বিক্রি করতে আসছেন৷
আজ সকালেও পুরাতন মালদার কিষান মান্ডিতে বিভিন্ন যানবাহনে ধান বোঝাই করে উপস্থিত হন চাষিরা৷ সেখানে তারা জানতে পারেন, এর আগে প্রত্যেক চাষি প্রতি পর্যায়ে সর্বাধিক 30 কুইন্টাল করে ধান বিক্রি করতে পারলেও গকতাল জেলা প্রশাসনের জারি করা এক নির্দেশিকা অনুযায়ী, আজ থেকে একেকজন চাষি সর্বাধিক 10 কুইন্টালের বেশি ধান বিক্রি করতে পারবে না৷ তেমনটা হলে প্রায় প্রত্যেক চাষিরই আজ লোকসান হত৷ কারণ, তাদের ভাড়া করা গাড়িতে ধান নিয়ে আসতে হয়েছে৷ এনিয়ে ক্ষোভ ছড়ায় চাষিদের মধ্যে৷ তারা কিষান মান্ডিতে বিক্ষোভ শুরু করে দেয়৷ বন্ধ হয়ে যায় ধান কেনাবেচার কাজ৷
আরও পড়ুন :রোজভ্যালি কাণ্ডে বাজেয়াপ্ত গৌতম কুণ্ডুর মোবাইল-ল্যাপটপের খোঁজ নেই
খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন ব্লক কৃষি আধিকারিক সাইফুল ইসলাম মণ্ডল৷ তিনি চাষিদের সঙ্গে কথা বলেন৷ জানান, আগে থেকে কোনও প্রচার না থাকায় আজ প্রত্যেক চাষির কাছ থেকে 30 কুইন্টাল করেই ধান কেনা হবে৷ তবে আগামিকাল থেকে একেকজন চাষির কাছ থেকে 10 কুইন্টালের বেশি ধান কেনা হবে না৷ তাঁর কথা মেনে নেয় চাষিরা৷ শিবিরে শুরু হয় ধান কেনাবেচার কাজ
কিষান মান্ডির পারচেস অফিসার তোফাইল শেখ বলেন, “গতকাল রাতেই আমরা প্রশাসনের এই নির্দেশিকা পেয়েছি৷ সেই অনুযায়ী আজ সকাল থেকে প্রত্যেক কৃষকের কাছ থেকে সর্বাধিক 10 কুইন্টাল করে ধান কেনা হবে বলে জানিয়ে দিই৷ এনিয়ে কৃষকদের মধ্যে খানিকটা অসন্তোষ ছড়ায়৷ শেষ পর্যন্ত এডিও ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়৷ এডিএ জানিয়েছেন, আজ একেকজন কৃষকের কাছ থেকে সর্বাধিক 30 কুইন্টাল করেই ধান কেনা হবে৷ আগামিকাল থেকে জেলা প্রশাসনের নয়া নির্দেশিকা কার্যকর করা হবে৷ আজই আমরা প্রতিটি এলাকায় এনিয়ে প্রচার শুরু করছি৷ আসলে সরকারি সহায়ক মূল্যে যাতে বেশি সংখ্যক কৃষক ধান বিক্রি করতে পারে, তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷”