মালদা, 28 ডিসেম্বর: দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ার ভয়েই কি দফতরে থাকা নথিপত্র পাচার করছিল তৃণমূল শাসিত গ্রাম পঞ্চায়েত (Gram Panchayat) ! গ্রামবাসীরা তেমনই অভিযোগ তুলেছেন ৷ সকালবেলায় পঞ্চায়েত দফতর থেকে তিনটি বস্তা ভর্তি নথি সরানো হচ্ছিল (Document Smuggling) ৷ স্থানীয় গ্রামবাসীদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা ভ্যান আটকে চালককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন ৷ এরপরেই শুরু হয়ে যায় ঝামেলা ৷ সেই খবর করতে গেলে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা ৷ এ নিয়ে আলোড়ন পড়েছে চাঁচল 2 নম্বর ব্লকের ভাকরি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৷ গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি ৷
জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে পঞ্চায়েতের সামনে একটি ভ্যান রিকশা দাঁড়িয়েছিল ৷ এক পঞ্চায়েত কর্মীর সাহায্যে সেই ভ্যানে তোলা হচ্ছিল বস্তাভর্তি নথিপত্র ৷ গ্রামবাসীদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা সেই নথিপত্রগুলি খতিয়ে দেখেন ৷ দেখা যায়, তার মধ্যে জবকার্ডের আবেদনপত্র, একাধিক টেন্ডার ও আবাস যোজনার নথি রয়েছে ৷ বেশিরভাগ নথিই চলতি বছরের ৷ যদিও গ্রামবাসীদের জেরায় পঞ্চায়েত কর্মী সুবোধ ঘোষ দাবি করেন, এসব পুরোনো নথি ৷ পঞ্চায়েত দফতরকে সাফসুতরো রাখতে সেসব ফেলার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ৷ অবশ্য তাঁর এই দাবিতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি গ্রামবাসীরা ৷ তাঁরা হট্টগোল শুরু করে দেন (Chanchal Villagers allege documents smuggled from Panchayat Dept) ৷
স্থানীয় গোলাম রসুল বলেন, "নিয়ম হল, সরকারি নথিপত্র পচে গেলেও বিক্রি করা যাবে না ৷ কারও সেই এক্তিয়ার নেই ৷ কিন্তু এখানে সেই নথি বিক্রির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল ৷ এর মধ্যে অনেক আবেদনপত্র রয়েছে ৷ সেসব সরানোর চক্রান্তও হতে পারে ৷ যেভাবে পঞ্চায়েত চলছে, মানুষকে হেনস্তা করছে, তাতে নথিপত্র সরিয়ে ফেলার চক্রান্তও হতে পারে ৷ প্রশাসনের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা উচিত ৷"
পঞ্চায়েত প্রধান সুমিত দাস অবশ্য দাবি করেন, পঞ্চায়েত দফতরকে সাফ রাখতেই নথিগুলি নষ্ট করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ৷ তিনি বলেন, "এসব পুরোনো কাগজপত্র ৷ ডাস্টবিনে ফেলে দিতে বলেছিলাম ৷ এর বেশি আর কিছু নয় ৷ এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কোনও নথি ছিল না ৷ আমি এসব বিক্রি করতে বলিনি ৷ শুধু নষ্ট করে দিতে বলেছিলাম৷ পঞ্চায়েতকর্মী মিথ্যে বলেছেন ৷ পঞ্চায়েত দফতরে প্রচুর কাগজ জমে গিয়েছে ৷ তাই সাফ করার কথা বলেছিলাম ৷"