মালদা, 24 ডিসেম্বর: বিএসএফের গুলিতে নিহত পাচারকারীর দেহ ফিরিয়ে নিতে অস্বীকার করল বাংলাদেশ (Bangladesh refuses to receive smugglers body)। এই ঘটনা নিয়ে দু’দেশের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে । প্রায় 36 ঘণ্টা ধরে নিহত বাংলাদেশি পাচারকারী ইব্রাহিম শেখের বরফচাপা মৃতদেহ পড়ে রয়েছে কালিয়াচক (Malda news) থানার শ্মশানি সীমান্ত চৌকিতে । বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত মৃতদেহ ফিরিয়ে না নিলে এদেশেই ইব্রাহিমের শেষকৃত্য হওয়ার সম্ভাবনা । যদিও সেক্ষেত্রে শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন জেলাশাসক বলে জানিয়েছে বিএসএফ (smuggler died in bsf firing) ৷
22 ডিসেম্বর রাত পৌনে দু‘টো নাগাদ দু’দেশের পাচারকারীরা কালিয়াচক থানার নওদা এলাকায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতারের কাছাকাছি চলে আসে । অভিযোগ, নেশার কাফ সিরাপ পাচার করাই ছিল তাদের লক্ষ্য । তাদের গতিবিধি টের পেয়ে প্রহরারত 70 নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা পাচারকারীদের সতর্ক করেন । কিন্তু তাঁদের সতর্কবার্তায় পাত্তা না দিয়ে কাঁটাতারের বেড়ার দিকে এগোতে থাকে পাচারকারীরা । পাচারকারীদের সরিয়ে দিতে শেষ পর্যন্ত জওয়ানরা স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করেন ।
আরও পড়ুন:cow smuggler died in BSF firing: দিনহাটায় বিএসএফের গুলিতে মৃত গরু পাচারকারী, জখম জওয়ান
এতে ভারতীয় পাচারকারীরা পিছু হঠলেও বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা জওয়ানদের লক্ষ্য করে ইট-পাথর, ধারালো হাঁসুয়া ছুড়তে শুরু করে । 15-20 জন বাংলাদেশি পাচারকারীদের আক্রমণ প্রতিহত করতে জওয়ানরা শেষ পর্যন্ত গুলি চালান । গুলিবিদ্ধ হয়ে কাঁটাতারের কাছেই লুটিয়ে পড়ে ইব্রাহিম । পরে তাকে উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে যান জওয়ানরা । সেখানে সে জানায়, তার বয়স 24 বছর । বাড়ি বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানা এলাকার ধুলিপাড়া গ্রামে । সেখানকার চোরাকারবারী কালু শেখের নির্দেশে সে দু’হাজার টাকার রফাতে সীমান্ত থেকে কাফ সিরাপ সংগ্রহ করতে এসেছিল ।
বিএসএফের তরফে তাকে রাতেই মালদা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় । কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন । ধুলিপাড়া গ্রাম দু’দেশের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে অন্তত ছ’কিলোমিটার বাংলাদেশের ভিতরে । এত দূর থেকে ইব্রাহিম বিজিবির নজর এড়িয়ে কীভাবে সীমান্ত এলাকায় এল, তা নিয়ে বিএসএফের (BSF BGB news) সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের তরফে প্রতিবেশী দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীকে একটি প্রতিবাদপত্র পাঠানো হয় । গোটা ঘটনা নিয়ে বুধবার বিকেলে বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে একটি বৈঠকও হয় । বৈঠকে বিজিবিকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ময়নাতদন্তের পর ইব্রাহিমের দেহ তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন:Smugglers Killed in BSF Firing : সিতাইয়ে বিএসএফের গুলিতে মৃত 3 গরুপাচারকারী
কিন্তু সন্ধে নাগাদ ইব্রাহিমের দেহ নিয়ে বিএসএফ সীমান্তে পৌঁছলে তা নিতে অস্বীকার করে বিজিবি । তারা জানিয়ে দেয়, ইব্রাহিম বাংলাদেশের নাগরিক নয় । তাই তারা দেহ ফিরিয়ে নেবে না । এই পরিস্থিতিতে এখনও পর্যন্ত দেহটি শ্মশানি বিওপিতেই বরফে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে । বিএসএফ-এর তরফে জানানো হয়েছে, আপাতত বাংলাদেশি পাচারকারীর মৃতদেহ বরফে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে । বাংলাদেশ দেহ ফিরিয়ে নিতে অস্বীকার করেছে । তারা যদি দেহ ফিরিয়ে না নেয়, তাহলে এ দেশেই ইব্রাহিম শেখের শেষকৃত্য করা হবে । এক্ষেত্রে শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন মালদার জেলাশাসক । যদিও এনিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেননি জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র।