মালদা, 10 মে : ব্যাঙ্ক ঋণ শোধ করতে না পারায় আত্মঘাতী কৃষক । ঘটনাটি ইংরেজবাজার ব্লকের বুধিয়া গ্রামের । মৃতের নাম খালেদুর রহমান (30) । তিনি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে ট্রাক্টর কিনেছিলেন । কিন্তু সঠিক ভাড়া পাচ্ছিলেন না । তার উপর ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ঋণ পরিশোধের জন্য চাপ দিচ্ছিল । কর্তৃপক্ষের চাপে আজ ভোরে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন খালেদুর ।
খালেদুরের বাড়িতে বিবি আনোয়ারা ছাড়াও রয়েছে ৩ ছেলেমেয়ে । আনোয়ারা বলেন " রমজান মাস শুরু হয়েছে । ভোর ৩টে নাগাদ খালেদুরই আমাকে ঘুম থেকে তুলে দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যায় । সকাল ৬টা নাগাদ খবর পাই, বাড়ি থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে শৈলপুর গ্রামে একটি আমগাছে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে । বছর খানেক আগে ব্যাঙ্ক থেকে ৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে একটি ট্রাক্টর কেনে । ব্যবসা ভালো চলছিল না বলে সেই ঋণের ২-৩টি কিস্তি মেটাতে পারেনি । গত ৫ তারিখ ব্যাঙ্ক থেকে লোকজন বাড়িতে আসে । তারা যেভাবেই হোক, টাকা দিতেই হবে । ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কিস্তির টাকা শোধ দেওয়ার জন্য ফোন করতে থাকে । এনিয়ে মানসিক চাপে পড়ে গেছিল । আমার ধারণা, সেই চাপ সহ্য করতে না পেরে শওহর আত্মঘাতী হয়েছে । গোটা বিষয়টি আমি পুলিশকে জানাব বলে ঠিক করেছি ।"
ঋণশোধ করতে না পারায় ব্যাঙ্কের চাপ, আত্মঘাতী কৃষক - engrejbajar
ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে ট্রাক্টর কিনেছিলেন এক কৃষক । সেই ঋণশোধ করতে না পারায় তিনি আত্মঘাতী হন।
খালেদুরের আব্বা আবদুস সাত্তার বলেন, "গত ৫ তারিখ সকাল ১১টা নাগাদ ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বাড়িতে এসেছিলেন । সেই সময় ছেলে বাড়িতে ছিল না । এই কথা বিশ্বাস না করেই তিনি বলেন এর আগেও বাড়িতে এসে ছেলেকে পাননি । এবারও পেলেন না । হয়তো সে বাড়িতেই আছে । আমি তখন ছেলেকে ফোন করি । তাকে ফোনে না পেয়ে বাধ্য হয়ে ম্যানেজারকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম ৷ আমি নিশ্চিত, ব্যাঙ্কের চাপে ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে ।"
ঘটনার খবর পেয়ে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ খালেদুরের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেলে পাঠায় । তবে মৃতের পরিবারের তরফ থেকে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি । এদিকে যে বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে খালেদুর ঋণ নিয়েছিলেন, সেই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দেয়, এনিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তারা কোনও কথা বলবে না । যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলবে ।