কলকাতা, 4 ফেব্রুয়ারি : রাজ্যে জোরকদমে বইতে শুরু করে দিয়েছে বিজেপি হাওয়া । নিজেদের পূর্ণশক্তি নিয়ে নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে নেমে পড়েছে গেরুয়া শিবির । বারবার বাংলায় উড়ে আসছেন দিল্লির নেতারা । বিগত পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকে বঙ্গে গেরুয়া শিবিরের পদধ্বনি শুরু হয়েছিল । উনিশের লোকসভা ভোটে সেই পদধ্বনি আরও প্রকট হয়েছে । রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিগত এক দশকে এতটা টালমাটাল কখনও দেখায়নি মমতার তখতকে । নীলবাড়ির চোদ্দতলায় বসে কিছুটা হলেও স্নায়ুর চাপ অনুভব করছেন নেত্রী । এবার নেত্রীর সেই চাপ কমাতে এগিয়ে এলেন তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর ।
রাজ্যে যে আবার তৃণমূলই ক্ষমতায় ফিরছে এবং মমতা যে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন সেই বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দিলেন পিকে । বঙ্গভোটে বিজেপি যদি একশোটির বেশি আসন পেয়ে যায়, তাহলে তিনি একেবারে তল্পিতল্পা গুটিয়ে ফেলবেন । এমনকি বন্ধ করে দিতে পারেন তাঁর সাধের আইপ্যাকও । গতকাল সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে এমনটাই জানিয়েছেন তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর । বলেছেন, এবারের ভোটে বিজেপি যদি একশো'র বেশি আসন জিতে যায়, তাহলে তিনি নাকি নির্বাচনী রণকৌশল তৈরির পেশাদারি কাজ চিরদিনের মতো ছেড়ে দেবেন । বাকি জীবনটা অন্য কিছু করে কাটাবেন, কিন্তু ভোটের রণকৌশল তৈরির কাজ আর তিনি করবেন না ।
প্রশান্ত কিশোরের এই ধরনের মন্তব্য কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে তৃণমূল নেত্রীকে । ভাবছেন, পিকের উপর তাঁর ভরসা মোটেই বিফলে যায়নি । আর এমনটা ভাবাটা খুবই স্বাভাবিক । আর তার মূল কারণ হল পিকের ট্র্যাক রেকর্ড । আজ আমরা যে মোদি-ম্যাজিককে চাক্ষুস করছি, তারও নেপথ্যে রয়েছেন প্রশান্ত কিশোর । 2012-র গুজরাত বিধানসভা ভোট । বিজেপির হয়ে নির্বাচনী রণকৌশল তৈরির কাজ করেছিলেন পিকে । বলতে গেলে পিকের হাত ধরেই তৃতীয়বারের জন্য গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসেছিলেন নরেন্দ্র দামোদর মোদি ।
আরও পড়ুন : 200 আসন না পেলে বিজেপি নেতারা কি পার্টি ছাড়বেন, প্রশ্ন পিকে-র
এরপর 2014-র লোকসভা ভোট । গুজরাত ভোটের সাফল্যের পর পিকের উপরেই ভরসা রেখেছিল গেরুয়া শিবির । মোদির ক্যারিশ্মমা, আর পিকের রণকৌশল... এই দুইয়ের উপর ভর করেই চোদ্দর লোকসভা ভোটে অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছিল গেরুয়া শিবির । ভোটের বাজারে পিকে যে কত বড় কিংমেকার, তা মোদির থেকে ভালো হয়ত আর কেউই জানেন না ।