কলকাতা, 26 সেপ্টেম্বর : এবার তৃণমূলের নির্বাচনী পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোরের ভোটও পেতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । কারণ উপনির্বাচনের আগে 159 নং ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রকাশিত ভোটার তালিকায় নাম সংযোজিত হয়েছে বিহারীবাবু প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor) । 2021-এর এপ্রিলে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election) আগে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে (Bhabanipur Vidhan Sabha Constituency) নিজের নাম ভোটার তালিকায় নথিভুক্ত করিয়েছিলেন তিনি । অর্থাৎ, আগামী 30 সেপ্টেম্বর ভবানীপুরের উপনির্বাচনে ভোট দিতে দেখা যেতে পারে তাঁকে ।
2019-এর লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election) খারাপ ফলের পর ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে তৃণমূল কংগ্রেস । বিধানসভা ভোটে ডবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে প্রত্যাবর্তন করেন মমতা । সেই প্রশান্তের সংস্থা আইপ্যাকের (I-PAC Indian Political Action Committee) সঙ্গে চুক্তি 2026 পর্যন্ত নবীকরণ করেছে তৃণমূল । এখন গোয়া ও ত্রিপুরায় তৃণমূলের সম্ভাবনার জমি তৈরি করছে বিহারীবাবুর দলবল । বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করলেও এবার ভবানীপুরের ভোটার হিসেবে নাম তুললেন আদতে বিহারের বাসিন্দা পিকে ।
আরও পড়ুন : Prashant Kishor : ভবানীপুরের ভোটার তালিকায় নাম ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের !
নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, 30 সেপ্টেম্বর সেন্ট হেলেন স্কুলে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন পিকে । তাঁর ভোটার সিরিয়াল নম্বর 905 । ভোটার তালিকায় আরও দেখা যাচ্ছে, পিকের বয়স উল্লেখ করা হয়েছে 44 বছর। তাঁর বাবার নাম শ্রীকান্ত পাণ্ডে । এছাড়াও পিকের কলকাতার ঠিকানা হিসেবে '21বি, রানি শংকরী লেন, কলকাতা-700025'-এর উল্লেখ রয়েছে । ভবানীপুরের উপনির্বাচনের মুখে এই হাতিয়ার নিয়ে আক্রমণ শানাতে দেরি করেনি বিজেপি । প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের (Priyanka Tibrewal) নির্বাচনী এজেন্ট সজল ঘোষের খোঁচা, 'আর বহিরাগত নয়, এবার একদম ঘরের ছেলে' ।
ভোটার তালিকায় নাম প্রশান্ত কিশোরের আগামী 30 সেপ্টেম্বর ভবানীপুরে উপনির্বাচন । এই লড়াই তৃণমূল নেত্রীর জন্য প্রেস্টিজ ফাইট । কারণ, মুখ্যমন্ত্রীর আসন ধরে রাখাতে প্রার্থী খোদ মুখ্যমন্ত্রী । পিকে অবশ্য এর আগে জানিয়েছিলেন আইপ্যাকের সঙ্গে তাঁর কোনও ধরনের সম্পর্ক নেই । কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের সম্পর্ক যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও মজবুত হচ্ছে, আজকের পর সেই নিয়ে আর কোনও সংশয়ের জায়গা রইল না ।
ভোটার লিস্টে যে এপিক নম্বর থাকে, তা দিয়ে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে সার্চ করলে সেই ভোটারের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় । এ ক্ষেত্রে ভোটার লিস্টে থাকা প্রশান্ত কিশোরের এপিক নম্বর দিয়ে যখন নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে সার্চ করা হয়েছে, তখন প্রশান্ত কিশোর নাম এবং তাঁর পোলিং বুথ পাওয়া গিয়েছে । যদিও কমিশনের ওয়েবসাইটে ভোটারের ছবি দেখা যায় না । তাই তিনিই ভোট কৌশলী এবং জেডিইউ-র প্রাক্তন সহ-সভাপতি প্রশান্ত কিশোর কি না, সেই নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে । তবে বিজেপি দাবি করছে, এই প্রশান্ত কিশোরই সেই প্রশান্ত কিশোর, যিনি একুশের বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূল কংগ্রেসের রেকর্ড জয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছেন ।
ভারতীয় সংবিধানের নিয়ম অনুসারে কোনও একটি জায়গায় কেউ দীর্ঘদিন থাকলে সেই জায়গার ভোটার হওয়া যায় । তবে এক্ষেত্রে আগের এলাকা থেকে নাম তুলে নিতে হয় । এরপর নতুন জায়গায় নাম নথিভুক্ত করা যায় । ঠিক এভাবে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর বাংলা থেকে নিজের নাম কাটিয়ে দিল্লির ভোটার হয়েছিলেন মুকুল রায় । তখন এ নিয়ে বিতর্ক হয়নি ৷ কিন্তু ইনি প্রশান্ত কিশোর ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের রণনীতিকার বলে কথা, তাই এসব প্রচার তো থাকবেই ।
আরও পড়ুন : Jago Bangla : তৃণমূলই আসল কংগ্রেস, রাহুলের দল পচা ডোবা ; কটাক্ষ জাগোবাংলায়
যদিও তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বলেন, "এমনই হেরেছে যে বিজেপির মাথাটা গিয়েছে ! ত্রিপুরা, ইউপি ও 2024 সালের কথা ভেবে আবোল-তাবোল বলছে । দেশের আইনকানুন জানে না । একটা মানুষ যে কোনও জায়গার ভোটার হতে পারেন । তবে এক জায়গায় ভোটার হতে গেলে তাকে পুরনো ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দিতে হবে । আমার বিশ্বাস সে কাজ সম্পন্ন করেই প্রশান্ত কিশোর ভবানীপুরের ভোটার হয়েছেন ।"