কলকাতা, 5 জুন: দুবাই যাওয়ার পথে কলকাতা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে বাধা পান অভিষেক-পত্নী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ যে ঘটনায় চড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ ৷ এমনকী বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের স্ত্রী'কে বিদেশ সফরে বাধা দেওয়ার বিষয়টিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে উল্লেখ করেছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন ৷ তাঁর দাবি, সুপ্রিম কোর্টের রায়কে অবমাননা করে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে ৷ যদিও আদালত অবমাননার ইস্যু নিয়ে মন্তব্য না-করলেও অতীত মনে করিয়ে দিলেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য ৷
সুপ্রিম কোর্ট শর্তসাপেক্ষে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিদেশ সফরের জন্য অনুমতি দিয়েছিল ৷ কোথায় যাচ্ছেন ? কেন যাচ্ছেন ? সব বিষয় ইডি-কে জানাতে বলা হয়েছিল বিদেশ সফরের আগে ৷ সেই প্রক্রিয়া রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় মেনেছিলেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে ৷ তবে, আজ রুজিরাকে কলকাতা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে আটকানোর ঘটনায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ করেছে তৃণমূল ৷ রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন দাবি করেছেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায়কে অবমাননা করে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে ৷ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা কোন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে, সেটা আরও একবার প্রমাণ হল ৷’’
তাঁর দাবি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘তৃণমূলে নব জোয়ার’ কর্মসূচির জেরে গ্রামবাংলায় বিজেপি খড়কুটোর মতো উড়ে যাচ্ছে ৷ তাই ভয় পেয়ে বিজেপি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে নেমেছে ৷ এর বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি ৷ সূত্রের খবর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার পর ফের আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি ৷
আরও পড়ুন:বিমানবন্দরে আটকানো হল রুজিরাকে, আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন অভিষেক
এই ইস্যুতে সোশাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ৷ টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘রাজনীতিতে পাল্লা দিতে না পেরে যারা ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে বাড়ির লোকদের হয়রানির মাধ্যমে ৷ নেতিবাচক বার্তা রটাতে চায়, তারা কাপুরুষ এবং রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া ৷ মনে রাখুক, প্রত্যেক ক্রিয়ারই বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে ৷ তৃণমূল সহ্য করছে মানুষের উপর আস্থা রেখে ৷ বাংলার মানুষ জবাব দেবেন ৷’’
রুজিরার বিদেশ সফরে বাধা দেওয়ার ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অবমাননার ইস্যুটি কার্যত এড়িয়ে গিয়েছে বিজেপি ৷ রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন, কোথায়, কীভাবে আটকানো হয়েছে ? এর বিন্দু বিসর্গ আমাদের জানা নেই ৷ যদি সুপ্রিম কোর্টের রক্ষাকবচ থাকে, তাহলে বিমানবন্দরে কেন তাঁকে আটকানো হল ? যদি কোনও ভুল পদক্ষেপ হয়ে থাকে, তা অবশ্যই ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক দেখবে ৷’’
আরও পড়ুন:অভিষেকের স্ত্রী রুজিরাকে ইডির নোটিশ, 8 জুন তলব দফতরে
তবে, রুজিরার রক্ষাকবচের ইস্যুতে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি শমীক ভট্টাচার্য ৷ তাঁর কথায়, ‘‘রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও সাধারণ মহিলা নন ৷ তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিবারের, আরও ভালোভাবে বলতে গেলে রাজ্যের এক নম্বর পরিবারের সদস্য ৷ তৃণমূলের তো সর্বাঙ্গে রক্ষাকবচ ৷ কবজ শরীরের সর্বত্র ৷’’
আর প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগে অম্বিকেশ মহাপাত্র এবং তানিয়া ভরদ্বাজ ইস্যু টেনে আনেন শমীক ৷ জানান, তৃণমূল যে প্রতিহিংসার রাজনীতির কথা বলছে সেটা মানুষ ভালো করেই জানে ৷ তাঁর কথায়, ‘‘মানুষ অম্বিকেশ মহাপাত্র এবং তানিয়া ভরদ্বাজকে ভুলে যায়নি ৷’’ আর বিজেপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করলে তৃণমূলের কেউ বিবৃতি দেওয়ার জায়গায় থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি ৷ রুজিরাকে ইমিগ্রেশনে আটকানোর ঘটনায় সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই কোনও টেকনিক্যাল ফল্ট আছে ৷ না হলে কেন তাঁকে আটকানো হবে ? প্রত্যেকদিন এত মানুষ যাচ্ছেন, সবাইকে তো আটকানো হয় না ৷ তাহলে ওনাকেই বা কেন আটকানো হল !’’