কলকাতা, 21 সেপ্টেম্বর: আলোকের ঝর্ণাধারায় সেজে উঠেছে মহানগর । বিজ্ঞাপনী হোর্ডিংয়ে মুখ ঢেকেছে রাজপথ । পথের পাশে বাঁশের ব্যারিকেড । পথে পুলিশের ব্যস্ততা । চেনা ছবির কোলাজগুলো ধরা দিয়েছে মহানগরী জুড়ে । কিন্তু প্রাণটাই যেন নেই । মহাপঞ্চমীর জনপ্লাবন এবার আর দেখল না শহর ।
শেষ কয়েক বছরের ছবিটা বলছে, মহাপঞ্চমীর রাত কলকাতার রাজপথ ভেসে যায় জনজোয়ারে । খাবারের স্টল, টক-ঝাল ফুচকা, বাঁশির আওয়াজ, আর জনতার কোলাহলে । এমন দৃশ্যই দেখতে অভ্যস্ত তিলোত্তমা । পঞ্চমী থেকেই শহর কলকাতা নিদ্রাহীন হয়ে যায় । ভেসে যায় উৎসবের আলোয় । কিন্তু এবারের পরিস্থিতি একেবারে ভিন্ন । কোরোনা আতঙ্কে কাঁপছে গোটা বিশ্ব । বিশেষজ্ঞদের ভবিষ্যৎবাণী, উৎসবের কলকাতার পুরোনো ছবি ফিরে এলে কোরোনা ভয়ংকর রূপ দেখাবে ৷ তখন পুরো পরিস্থিতি চলে যাবে হাতের বাইরে । সেই আতঙ্কে আতঙ্কিত শহরবাসী এবার কার্যত ঘরবন্দী । অন্তত উৎসবের প্রথম দিনটায় দেখা গেছে তেমনই ছবি ।
দক্ষিণ কলকাতার চেতলা থেকে রাসবিহারী অ্যাভিনিউ হয়ে কসবা । এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি বড় পুজো হয় । চেতলা অগ্রণী, বাদামতলা আষাঢ় সংঘ, 95 পল্লি, মুদিয়ালি, দেশপ্রিয় পার্ক, বালিগঞ্জ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন, একডালিয়া এভারগ্রিন থেকে কসবা শীতলা মন্দির । একের পর এক বিগ বাজেটের পুজো । এই পথ কার্যত চলে যায় জনতার দখলে । ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে । এবারও পথে পুলিশ আছে । কিন্তু তাদের ব্যস্ততা নেই । পথে যানজট নেই । তবে উৎসাহী কিছু মানুষ অবশ্যই পথে নেমেছিল । তাঁরা প্রতিমা দর্শনে আগ্রহী । কিন্তু আদালতের নির্দেশ মেনে প্রতিটি পূজা কমিটি মণ্ডপকে নো এন্ট্রি জ়োন হিসেবে ঘোষণা করেছে । ফলে মণ্ডপে প্রবেশ করতে পারছেন না কেউই। বাইরে থেকেই চলছে প্রতিমা দর্শন । কিংবা সেলফি তোলা ।
কসবার অভীক পাল মাকে নিয়ে প্রতিমা দর্শনে বেরিয়েছিলেন । বললেন, “ মানুষের মধ্যে সচেতনতা দেখতে পাচ্ছি । প্রত্যেকেই মাস্ক পরে বেরিয়েছেন । পুজো কমিটিগুলির নির্দেশ পালন করছে । অন্যবার যে ভিড় দেখা যায় এবার তা নেই ।" একই কথা গড়িয়ার সূপর্ণা মুখোপাধ্যায়েরও । বন্ধুদের সঙ্গে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছেন তিনি । বললেন, “ উৎসবে একটু আনন্দ করব না তাও কি হয় । কিন্তু সবটাই করছি সচেতনভাবে । বেশ কয়েকটি ঠাকুর দেখেছি । কিন্তু সবথেকে বেশি যেটা চলছে তা হল মানুষের সচেতনতা ।"