নয়াদিল্লি, 3 অক্টোবর: একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বাংলায় দুর্নীতি ইস্যুতে সিবিআই তদন্তের দাবি তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে বসে এই দাবি তুলেছেন তিনি ৷ নন্দীগ্রামের বিধায়ক জানিয়েছেন, আজ বিকেলে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন রাষ্ট্রমন্ত্রী নিরঞ্জন জ্যোতির সঙ্গে দেখা করে তিনি এই দাবি করবেন ৷
উল্লেখ্য, গতকাল, সোমবার থেকে দিল্লিতে ধরনা-বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ গতকাল রাজঘাটে ধরনা করেছে তারা ৷ আজ, মঙ্গলবার তারা যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে ৷ তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার সঙ্গে বঞ্চনামূলক আচরণ করছে ৷ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে রাখছে ৷
এই নিয়ে এ দিনই নয়াদিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ সেই সাংবাদিক বৈঠক থেকে তিনি সরাসরি তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন ৷ তাঁর দাবি, একশো দিনের কাজে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে ৷ সেই কারণে এক কোটির বেশি জবকার্ড বাতিল হয়েছে ৷ দক্ষিণ 24 পরগনায় সবচেয়ে বেশি ভুয়ো জবকার্ড পাওয়া গিয়েছে ৷ 1 কোটি জবকার্ড অজ্ঞাত কারণে বাতিল হয়েছে ৷ আবাস যোজনাতেও দুর্নীতি হয়েছে ৷
শুভেন্দু অধিকারী জানান, একশো দিনের কাজের প্রকল্প ও আবাস যোজনায় দুর্নীতি নিয়ে তিনি একাধিক কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখেছেন ৷ দুর্নীতির নথি দিয়েছেন ৷ তার পর তদন্ত হয়েছে ৷ সেই কারণেই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে গিয়েছে বলে তাঁর দাবি ৷
আরও পড়ুন:সিবিআই তদন্তের হুমকি গিরিরাজের, স্বাগত জানিয়ে মন্ত্রীকে পালটা গ্রেফতারির দাবি অভিষেকের
সেই কারণেই এই দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন তিনি ৷ এই দুর্নীতিকে তিনি স্বাধীনতার পর দেশে সবচেয়ে বড় দুর্নীতি বলে উল্লেখ করেছেন ৷ শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, হাজার হাজার পঞ্চায়েত প্রধান, নির্মাণ সহায়ক ও বিডিও-রা এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ৷
তাই নন্দীগ্রামের বিধায়কের দাবি, মিথ্যা ও অপপ্রচারমূলক রাজনৈতিক প্রচার তৃণমূলের ৷ লোকসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গে মানুষের হারানো ভরসা ফিরিয়ে আনতে তৃণমূল এই ধরনা দিচ্ছে ৷ সেই ধরনা দিতে গিয়ে সোমবার রাজঘাটে তৃণমূল বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু ৷
তিনি বলেন, ‘‘গতকাল গান্ধি জয়ন্তীতে রাজঘাটে যেভাবে তারা (টিএমসি) জনগণের সঙ্গে আচরণ করার চেষ্টা করেছিল - রাজঘাট কমিটি বা দিল্লি পুলিশের অনুমতি ছাড়াই । 2.5-3 ঘণ্টা ধরে, তারা গান্ধীজিকে শ্রদ্ধা জানাতে সারা দেশ থেকে আসা লোকদের হয়রানি করেছে...এটি গুন্ডাদের দল ।’’
তাঁর আরও দাবি, বাংলার জন্য কোনও উন্নয়নের কাজ না করে দুর্নীতি ঢাকতেই তৃণমূল পরিবারতন্ত্র, দুর্নীতি ও তোষণের ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অংশ হয়েছে ৷ এই সূত্রে তিনি বাংলার কংগ্রেস ও সিপিএমের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছেন ৷ বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, 2011 সালের পর থেকে বিরোধী ছিল কংগ্রেস ও সিপিএম ৷ সেটা সেটিং বিরোধী ছিল, তাই এত দুর্নীতি হয়েছে ৷ কিন্তু এখন যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চুরি করবে, সেখানেই বিজেপি লড়াই করবে ৷
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বারবার দাবি করেছেন, কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে বাংলায় দুর্নীতি হয়ে থাকলে, তা নিয়ে সিবিআই তদন্ত হোক ৷ এই নিয়ে এ দিন শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ, এই বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের সামনে না বলে অভিষেকের উচিত আদালতের দ্বারস্থ হয়ে সিবিআই তদন্ত চাওয়া ৷
আরও পড়ুন:মনরেগায় গরিবদের অর্থ লুট করেছে মমতার সরকার, অভিযোগ গিরিরাজের