কলকাতা, ১১ মার্চ : উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে টিচার স্টাফরুমের ভিতর বাজি ছোড়ার অভিযোগ উঠল কয়েকজন পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। ঘটনায় জখম হন একজন শিক্ষিকা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থানে আসে শ্যামপুকুর থানার পুলিশ। পরীক্ষায় কড়া নজরদারির ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি আহত শিক্ষিকার।
আজ উচ্চমাধ্যমিকের কেমিস্ট্রি, ইকোনমিকস, জার্নালিজ়ম অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশন ও সংস্কৃতের পরীক্ষা ছিল। শ্যামবাজার AV স্কুলে সিট পড়েছিল তাঁতিয়া হাইস্কুলের পরীক্ষার্থীদের। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর স্কুলের বাইরে বেরিয়ে বাজি ফাটানো শুরু করে কয়েকজন পরীক্ষার্থী। তারপর টিচার স্টাফরুমের ভিতর ছোড়ে বাজি। উচ্চমাধ্যমিকের পাশাপাশি দ্বিতীয়ার্ধে চলছে ক্লাস ইলেভেনের পরীক্ষা। তাই এই ঘটনায় খানিকটা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে পরীক্ষার্থীরা।
ইলেভেনের এক পরীক্ষার্থীর মা সীমা দাস বলেন, "আমরা এসে দেখছি কয়েকজন পরীক্ষার্থী বাজি ফাটাচ্ছে। আজ কয়েকজনের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। তাই আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম ওরা হয়তো আনন্দ করছে। তাই বাজি ফাটাচ্ছিল। তারপর দেখি কয়েকজন পরীক্ষার্থী শিক্ষিকাদের ঘরে বাজি ছোড়ে। ঘটনায় একজন শিক্ষিকার পা খানিকটা পুড়ে গেছে। তারপরে স্কুল থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা সবাই বেরিয়ে আসেন।"
এবছর প্রথম থেকেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় মোবাইল ব্যবহার রুখতে কড়া নির্দেশিকা জারি করে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এখনও পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে মোট ১৮ জন পরীক্ষার্থীকে মোবাইল-সহ ধরা হয়। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে সংসদ। এই ১৮ জনের মধ্যে দু'জন পরীক্ষার্থী শ্যামবাজার AV স্কুল থেকে ধরা পড়েছিল। তাই প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, হয়তো সেই কারণেই বাজি ছোড়া হয়েছে। অভিভাবক সীমা দাস বলেন, "কিছুদিন আগেও দেখেছিলাম ভিতরে মোবাইল নিয়ে ধরা পড়েছে। শুধু এটুকুই শুনেছি। তবে নকল করেছে কি করেনি সেটা আমরা শুনিনি। আমাদের স্কুলে চিরকালই শিক্ষিকারা খুব কড়া নজর দেন। তাই হয়তো সেই রাগটাই আজ বের করেছে পরীক্ষার্থীরা।"
জখম স্কুল শিক্ষিকা সোমা দত্ত বলেন, "যাদের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হচ্ছিল তাদের কেউ স্টাফরুমের বাইরে থেকে বাজি ছুড়েছে। আমি সামনে ছিলাম। গায়ে লেগেছে। বিষয়টি কাউন্সিলকে নিশ্চয়ই জানাবে স্কুল। আমি একা কী করব? সামান্য একটা বাজি ছুড়েছে। আমার পায়ে একটু লেগেছে। আর কারও লাগেনি।"