পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

By

Published : Mar 4, 2019, 4:57 AM IST

ETV Bharat / state

রাম-রহিম দু'জনেই সাইকেল পাচ্ছে, সংখ্যালঘু প্রীতি কোথায় হল : CPI(M) বিধায়ক

ওয়েলফেয়ার ফার্মার প্রোডিউসার অর্গানাইজেশন কলকাতার ব্যানারে গতকাল সল্টলেকের ইস্টার্ন জ়োনাল কালচারাল সেন্টারে 'বেঙ্গল নিড চেঞ্জ' শীর্ষক আলোচনাচক্রের আয়োজন হয়। ওই আলোচনাচক্রে বক্তার তালিকায় ছিলেন CPI(M) বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী জনসভায় হেলিকপ্টার ব্যবহার প্রসঙ্গে বলতে গেলেই তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে একদল শ্রোতা। বিক্ষোভকারীরা BJP সমর্থক ছিল বলে দাবি করা হয়েছে।

তন্ময় ভট্টাচার্য

বিধাননগর, ৪ মার্চ : ওয়েলফেয়ার ফার্মার প্রোডিউসার অর্গানাইজেশন কলকাতার ব্যানারে গতকাল সল্টলেকের ইস্টার্ন জ়োনাল কালচারাল সেন্টারে 'বেঙ্গল নিড চেঞ্জ' শীর্ষক আলোচনাচক্রের আয়োজন হয়। ওই আলোচনাচক্রে বক্তার তালিকায় ছিলেন CPI(M) বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে নরেন্দ্র মোদির নাম। তিনি প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী জনসভায় হেলিকপ্টার ব্যবহার প্রসঙ্গে বলতে গেলেই তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে একদল শ্রোতা। বিক্ষোভকারীরা BJP সমর্থক ছিল বলে দাবি করা হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা তন্ময় ভট্টাচার্যকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। তন্ময়বাবুকে বক্তব্য রাখতে বাধা দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। গন্ডগোলের মধ্যে একসময় সভা ভন্ডুল হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে উদ্যোক্তারা বিক্ষোভকারীদের থামিয়ে দিলে ফের শুরু হয় আলোচনাচক্র। যখন এই বিক্ষোভ চলছে তখন মঞ্চে ছিলেন BJP রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনিও বিক্ষোভকারীদের থেমে যেতে বলেন। পরিস্থিতি একসময়ে এমন তৈরি হয় যে বক্তব্য থামিয়ে দিতে হয় তন্ময়বাবুকে। পরে অবশ্য মাত্র এক লাইন বলে বক্তব্য শেষ করেন তিনি।

মঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার সময় একরাশ বিরক্তি প্রকাশ করে তন্ময়বাবু বলেন, "আমাকে উদ্যোক্তারা ফোন করে বলেছিলেন যে এই শিরোনামে একটা আলোচনা সভা হবে। তারা অনেক বক্তার নাম বলেছিলেন। আমায় রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা, আর একটা স্বাস্থ্য-শিক্ষা নিয়ে বলতে বলা হয়। প্রথম থেকে কী আলোচনা হয়েছে জানি না। আমি যখন এসেছি তখন আইন শৃঙ্খলাও দেখিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্যর ব্যাপারেও কথা বলতে দেখিনি। সভা এবং আমাকে যদি আক্রমণ করা হয় তাহলে আমাকেও প্রতি আক্রমণে যেতে হয়। অসুস্থতা এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে অশোক গাঙ্গুলির মতো লোক যখন বলছিলেন তখন তাঁকেও চ্যালেঞ্জ করা হল। একটা মনোজ্ঞ আলোচনা হতে পারত কিন্তু সেই আলোচনাটাকে কলুষিত করার মতো একটা ব্যবস্থাপনা এখানে ছিল। যে কোনও কারণেই হোক ছিল।"

এবিষয়ে BJP রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "এটা ঠিক যে শ্রোতাদের মধ্যে BJP-র লোক বেশি ছিল। নাহলে কে শুনতে আসবে। আসবে না কারণ তাদের হজম হবে না। এটা ঠিক যে শ্রোতাদের মধ্যে এবং বক্তাদের মধ্যে অনেকেই BJP-র লোক ছিলেন। কিন্তু সবাইকে বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তন্ময়বাবু একটু বিতর্ক পছন্দ করেন। কারণ বিতর্ক ছাড়া ওঁর কিছু করার নেই।"

অভিযোগ, সভা ভন্ডুলকারীদের বেশিরভাগই BJP সমর্থক। এ বিষয়ে তন্ময় ভট্টাচার্যকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "নির্দিষ্ট করে বলতে পারব না। তবে বক্তাদের মধ্যে একজন BJP নেতার নাম ছিল আমি দেখেছি। যদিও যার নাম ছিল তাকে আমি দেখিনি। অন্য দু'জন BJP নেতাকে আমি দেখেছি। বিশেষ করে তথাকথিত উগ্র জাতীয়তাবাদের আত্মপ্রকাশের পরও অন্যায়ের প্রতিবাদ করে যাব। আপনারা দেখেছেন আমি মঞ্চে দাঁড়িয়ে ছিলাম যখন বাধা দেওয়া হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত আমি প্রতিবাদে রাস্তায় ছিলাম। তারা যে মহাভারতের মানে বোঝে না, গীতার মানে বোঝে না, বেদের মানে বোঝে না সেটাও আমি বলে এসেছি। আর আমার বলা কথাকে চ্যালেঞ্জ করবার জন্য আমার নামে মানহানির মামলা করবার জন্য আবেদন জানিয়ে এসেছি।"

তিনি আরও বলেন, "অশোক গাঙ্গুলি দেশের একজন অত্যন্ত সম্মানজনক সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ছিলেন। তিনি বলেছেন ইলেকশন কমিশন একটা ভালো কাজ করেছে পাঁচ বছরের আয়-ব্যয়ের হিসেব চেয়েছে। যে কোনও ভারতবাসীকে জিজ্ঞেস করা হোক তারা বলবে ইলেকশন কমিশন ভালো কাজ করেছে। আমাকে অনেক জায়গাতেই থামানো হয়েছে। আমি যখন উল্লেখ করলাম গৌতম আদানির কথা, রাহুল সিনহা বললেন রহিম সাইকেল পাচ্ছে রাম সাইকেল পাচ্ছে না। আমি এই মিথ্যাটা মানতে পারি না। সরকারের সমালোচনা করব কিন্তু মিথ্যা কেন বলব ? এটা তো সত্য নয় যে মুসলমান শুধু সাইকেল পেয়েছে হিন্দুরা পায়নি। পাঁচ বছরে একটাও মাদ্রাসার অনুমোদন হয়নি এটাই ঠিক। কিন্তু এটা তো সত্য না রহিম সাইকেল পাচ্ছে, রাম পাচ্ছে না। আমি মিথ্যা সমালোচনায় যাব কেন ?"

ABOUT THE AUTHOR

...view details