কলকাতা, 18 মে :পুরোপুরিভাবে সুস্থ না-হলেও করোনার নাগপাশ কাটিয়ে ফের গড়িয়েছে পৃথিবীর চাকা ৷ সবকিছুই ফিরেছে নিজের ছন্দে ৷ দুঃস্বপ্নের দু'টো বছর কাটিয়ে দিন ফিরছে কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীদেরও ৷ করোনার দাপটে মা দুর্গার আরাধনাতেও কোপ পড়েছিল ৷ পুজো বন্ধ করে দিয়েছিল বড় সংখ্যক পুজো কমিটি ৷ বাইশের আশ্বিনের শারদ প্রাতে বদলে যাচ্ছে অনেক কিছুই ৷ বরাত এসেছে বিগত বছরগুলির থেকে অনেক বেশি ৷ কুমোরটুলি থেকে চলতি বছরে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে রেকর্ড সংখ্যক দুর্গা প্রতিমা ৷
কলকাতার বিখ্যাত কুমোরপাড়ার মরা গাঙে বান এসেছিল চলতি বছরের সরস্বতী পুজোর সময়ই ৷ দীর্ঘদিন বাদে খোলে স্কুলের দরজা ৷ বেড়ে গিয়েছিল স্কুলপড়ুয়া আর শিক্ষক, শিক্ষিকাদের আনাগোনা ৷ কিন্তু কুমোরটুলি মানেই তো দুর্গা প্রতিমা ৷ বিগত দুটো বছর ধরে দুর্গা প্রতিমার চাহিদা প্রায় ছিল না বললেই চলে ৷ কোথাও নমো নমো করে পুজো হয়েছে, কোথাও বা বন্ধই ছিল ৷ বিদেশ থেকেও তেমন বরাত মেলেনি ৷ ব্যাপক সমস্যায় পড়েন মৃৎশিল্পী, কারিগর, শোলা শিল্পীরা ৷ চলতি বছরে সেই পরিস্থিতি পুরোপুরি পালটে গিয়েছে ৷ কুমোরটুলির গলি থেকে আমেরিকা, কানাডা-সহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিচ্ছে শতাধিক দুর্গা প্রতিমা ৷
কুমোটুলির অন্যতম নামী শিল্পী মিন্টু পাল ৷ এবছর তাঁর তৈরি মোট 10টি প্রতিমা বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে ৷ তার মধ্যে আমেরিকায় যাচ্ছে 5টি ৷ বর্তমানে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেও গত দুটো বছরের দুঃস্বপ্ন এখনও তাড়া করে বেড়ায় এখানকার শিল্পীদের ৷ মিন্টু পাল বলছিলেন, গত দু'বছরে বিদেশ থেকে তাঁর কাছে বরাত এসেছিল তিন বা বড়জোর চারটি ৷ পরে দুটি প্রতিমার অর্ডার বাতিল হয়ে যায় ৷ সেখানে এবছর মিন্টু পালের তৈরি দশটি প্রতিমা যাচ্ছে আমেরিকা, জাপান, দুবাই, কানাডা, ইতালি ৷ তিনি ছাড়াও শিল্পী কৌশিক ঘোষ, সুবল পাল, বাসুদেব পাল, সনাতন পাল, প্রদীপ রুদ্র পাল-দের প্রতিমাও যাচ্ছে সাত সমুদ্র তেরো নদী পারে । বাসুদেব পালের 5টি প্রতিমা কানাডা, জার্মানি, আমেরিকা যাচ্ছে । এবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক, তাই অর্ডার দেওয়ার পর 1 মাসের মধ্যেই পাঠানো হচ্ছে প্রতিমা ।
আরও পড়ুন : দুর্গাপুজোর হেরিটেজ স্বীকৃতি নিয়ে আগামী 1 সেপ্টেম্বর কলকাতায় শোভাযাত্রা, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর