কলকাতা, 18 অগস্ট:যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল থেকে পড়ে প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় নয়া তথ্য পেল পুলিশ ৷ এই ঘটনার তদন্তে এবার নয়া তথ্য এসেছে লালবাজারের হোমিসাইড বিভাগের হাতে । ওই ছাত্রের মৃত্যুর পর উদ্ধার হয়েছিল একটি রহস্যময় ডায়েরি । সেই ডায়েরির সূত্র ধরেই এই তথ্য উঠে এসেছে ৷ লালবাজার সূত্রে খবর, তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন যেহেতু ওই পড়ুয়া বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে সেই প্রকারের দাপট ছিল না ধৃত সৌরভ চৌধুরী ও তার সহযোগীদের সে কারণে বাংলা বিভাগকে নিজেদের আয়ত্তে আনার জন্যই অভিযুক্ত ও ধৃতদের একাংশ ওই পড়ুয়াকে টার্গেট করেছিল ৷
সৌরভ চৌধুরীর পাশাপাশি ধৃত প্রাক্তন পড়ুয়া সপ্তক কামিল্যাও এই পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত ৷ এই ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় ব়্যাগিংয়ের বিষয়টি আগেই উঠে এসেছিল পুলিশের তদন্তে ৷ কিন্তু কী করে কারণে ওই ছাত্রের ব়্যাগিং করা হয়েছিল তা ধীরে ধীরে পরিষ্কার হচ্ছে ৷ সেক্ষেত্রে উঠে আসছে ক্যাম্পাসের ছাত্র রাজনীতি ও বিভিন্ন বিভাগে ছাত্র সংগঠনগুলির দাপট বৃদ্ধির বিষয়টি ৷
এই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই পড়ুয়া যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাওয়ার পর ঠিক করেছিল হস্টেলে গিয়ে না থেকে সে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকবে । কিন্তু প্রথম দিকে সে বাড়ি ভাড়া না পাওয়ায় হস্টেলে থাকতে শুরু করে ৷ এক্ষেত্রে ওই পড়ুয়াকে মেন হস্টেলে ঘর পেতে সাহায্য করে ধৃত সৌরভ চৌধুরী এবং মনোতোষ ঘোষ । এরপরেই ওই পড়ুয়াকে যাদবপুর মেন হস্টেলের একটি ব্লকের আটষট্টি নম্বর ঘরে থাকার প্রাথমিকভাবে বন্দোবস্ত করে সৌরভরা । পুলিশের দাবি, গোটাটাই ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে একটি সাজানো পরিকল্পনা বলেই ৷
আরও পড়ুন:যাদবপুরের ঘটনায় এখনও অধরা কমপক্ষে 15 জন, দাবি লালবাজারের
9 তারিখ রাতে ওই ঘটনার পর প্রথম ছাত্রটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ পড়ে সেখানে ওই পড়ুয়াকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা ৷ যে ট্যাক্সিতে করে ওই ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট ট্যাক্সি এবং সেই ট্যাক্সি চালক তুলসী যাদবকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ । তাঁর বয়ানও নেওয়া হয়েছে ৷ প্রয়োজনে, ধৃত প্রাক্তন ও বর্তমান পড়ুয়াদের চিহ্নিতকরণে ওই ট্যাক্সিচালককে টিআই প্যারেডেও ডাকা হতে পারে ৷ ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট ট্যাক্সি থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি গামছা, মিলেছে রক্তের দাগ । গামছাতেও রক্তের দাগ ছিল ৷ এই ট্যাক্সির ফরেনসিক পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে আসলে এই ঘটনায় তদন্তে আরও সুবিধা হবে এবং এক্ষেত্রে ট্যাক্সিচালকের বয়ান তদন্তে নতুন গতি আনতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে ।