কলকাতা, 2 মে: বুলডোজারের জবাব বাউলেই দিতে চান মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় । প্রসঙ্গত, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে তাঁর জমি থেকে উচ্ছেদের প্রয়াস চালাচ্ছে । এই অবস্থায় এই বিশিষ্ট মানুষটির পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী । কয়েকদিন আগে তিনি অমর্ত্য সেনের হয়ে প্রকাশ্য সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন, এই বিশিষ্ট মানুষটিকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা হলে সবার আগে তিন ধরনায় বসবেন ।
মঙ্গলবার ছিল রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক । এই বৈঠকে তিনি মন্ত্রিসভার সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, বিশ্বভারতী যদি বলপূর্বক উচ্ছেদের চেষ্টা করে, তাহলে প্রতীচীর সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে বসতে হবে । দলের নেতা-কর্মীর পাশাপাশি বাউলদেরও এই কাজে যুক্ত করতে হবে । আসলে বিশ্বভারতীর বুলডোজারের জবাব বাউলেই দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী ।
প্রসঙ্গত, এ দিন মন্ত্রিসভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহা । তাঁকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের সঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ যে ধরনের আচরণ করছে তাতে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী । এত বড় একটা মানুষ যিনি শুধু বাংলাকে নয়, গোটা দেশকে গর্বিত করেছেন, তাঁর এই অবমাননা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি । আর সে কারণেই তিনি নির্দেশ দিয়েছেন অমর্ত্য সেনের বাড়ির সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থানের ।
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এই অবস্থানে কি যোগ দিতে পারেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ? এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, "ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী নিজে বলেছেন অমর্ত্য সেনের বাড়ি ভাঙার চেষ্টা হলে সবার আগে তিনি ধরনায় বসবেন । এই অবস্থায় তাঁর অবস্থান তিনি স্পষ্ট করেছেন । আলাদা করে আমাদের এই নিয়ে কোনও নির্দেশ বা বক্তব্য জানাননি ।"
এ দিকে রাজ্য রাজনীতিতে যথেষ্ট আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে এই প্রবীণ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে উচ্ছেদের ঘটনা । বিশিষ্টদের একাংশ ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়েছেন । এমনকী জানা গিয়েছে, আগামী 6 মে যেদিন অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদের চূড়ান্ত তারিখ দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, সেই দিন তাঁরা অমর্ত্য সেনের বাড়ির সামনে অবস্থানে বসছেন । তাহলে কি বাউলদের উপস্থিতিতে দলকে তিনি যে এ দিন শান্তিপূর্ণ অবস্থানের কথা বললেন, তা কি আদতে পটভূমি তৈরির একটা ইঙ্গিত ? যদিও এই নিয়ে সরকারিভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ।
এই অবস্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ পর্যন্ত কী পদক্ষেপ করেন, সেটাই এখন দেখার । পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী 6মে জমি খালি করার শেষ দিন হিসাবে ধার্য করা হয়েছে । যদি প্রয়োজন পড়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তাহলে বলপ্রয়োগ করবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয় । পালটা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ । এখন দেখার শেষ পর্যন্ত কোথাকার জল কতদূর গড়ায় ।
আরও পড়ুন:অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদের পথে কবির সুমন-গৌতম ঘোষ, থাকতে পারেন মুখ্যমন্ত্রীও