পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

চিটফান্ড মামলায় ৩ পুলিশ কর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের উপর স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের - CBI

বিচারপতি শিবকান্ত প্রসাদ রায়দান স্থগিত রাখেন। ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ ও তিন পুলিশকর্তাকে CBI জিজ্ঞাসাবাদের উপর স্থগিতাদেশ দেন রায়দান পর্যন্ত।

হাইকোর্ট

By

Published : Feb 13, 2019, 9:32 PM IST

কলকাতা, ১৩ ফেব্রুয়ারি : রাজ্যের তরফে AG কিশোর দত্ত বারবার CBI-কে তাদের চিটফান্ড সংক্রান্ত মামলার তদন্তে সহায়তা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনেরাল কৌশিক চন্দ বিভিন্ন তথ্য দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, রাজ্য সরকার আদৌ CBI অফিসারদের সঙ্গে সহযোগিতা করছে না। উলটে হেনস্থা করা হয়েছে। চিটফান্ড সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে আজ বিচারপতি শিবকান্ত প্রসাদের সিঙ্গল বেঞ্চে পারস্পরিক দোষারোপ করল দুই পক্ষ। সবকিছু শোনার পর বিচারপতি অবশ্য রায়দান স্থগিত রাখলেন। পাশাপাশি বিচারপতির নির্দেশ, মামলার রায়দান পর্যন্ত তিন পুলিশ কর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের উপর স্থগিতাদেশ জারি থাকবে। পাশাপাশি আলিপুর কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেট নির্দেশ দিয়েছিলেন CBI অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বালিগঞ্জ থানা ডেকে পাঠাতে পারে, তার উপরেও স্থগিতাদেশ বজায় থাকবে রায়দান পর্যন্ত।

আজ কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনেরাল কৌশিক চন্দ বলেন, "২০১৪ সালের চিটফান্ড সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলায় সুপ্রিমকোর্ট নির্দেশ দেয় CBI অনুসন্ধান চালাতে পারবে। সেই নির্দেশের পরই CBI রাজ্যের বিভিন্ন চিটফান্ড সংক্রান্ত মামলায় অনুসন্ধান শুরু করে। তিন পুলিশ কর্তা দিলীপ হাজরা, শংকর ভট্টাচার্য ও অর্ণব ঘোষকে CBI ৩০ নভেম্বর ২০১৮ সালে নোটিশ পাঠায়। ২০১৭ সালে আমানতকারীদের দুটি দল রোজ়ভ্যালির একটি হোটেল ভাঙচুর করে। এরপর হোটেলের ম্যানেজার বালিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার জন্য CBI অফিসার ব্রতীন ঘোষালকে কেন ডাকা হবে বালিগঞ্জ থানায় ? তাকে তিন-চার ঘণ্টা ধরে পুলিশ হেনস্থা করেছে। রোজ়ভ্যালি সংক্রান্ত বিষয়ে যদি কারও কিছু বলার থাকে তাহলে তাঁকে ওড়িশাতে সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশে যে বিশেষ আদালত গঠন করা হয়েছে সেখানে গিয়ে বলতে হবে।"

অন্যদিকে রাজ্যের তরফে AG বলেন, "রোজ়ভ্যালির একটি হোটেল ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে দীপক শর্মা, পৌলমি চক্রবর্তী, জয়া সাহা ও নারায়ণ চন্দ্র নামে চার আমানতকারী বালিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ২০১৭ সালে। এরপর CBI অফিসার ব্রতীন ঘোষাল CGO কমপ্লেক্সে রোজ়ভ্যালিতে টাকা খোয়ানো নারায়ণ চন্দ্রকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠান। সেখানে তাঁকে দীর্ঘ সময় ধরে জেরা করা হয়। এমন কী, তাঁর ছেলের নাম, ছেলের ফোন নম্বর পর্যন্ত চান ওই CBI অফিসার। এর বিরুদ্ধে বিধাননগর থানায় সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ জানান তিনি। আলিপুর কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে বালিগঞ্জ থানা ব্রতীন ঘোষালের কাছে এই জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিয়ো ফুটেজ চেয়ে পাঠিয়েছিল। কিন্তু সেটা তিনি দেননি। অথচ সুপ্রিমকোর্টের পরিষ্কার নির্দেশ আছে চিটফান্ড সংক্রান্ত মামলায় CBI ও রাজ্যের পুলিশ পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করবে। ওই অফিসার সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছেন। পাশাপাশি যে পুলিশ কর্তাদের CBI জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চিঠি দিয়েছিল তাঁদের মধ্যে একজন ইতিমধ্যেই মারা গেছে।" রাজীব কুমারের নাম উহ্য রেখে AG বলেন, "সুপ্রিমকোর্ট তো নির্দেশ দিয়েছে, এই মুহূর্তে কোনওরকম শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে পারবে না CBI !"

পালটা জবাবে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনেরাল বলেন, "আলিপুর কোর্টের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিধাননগর আর বালিগঞ্জের মধ্যে এরিয়া গুলিয়ে ফেলেছেন। আর ম্যাজিস্ট্রেট কোনও নির্দেশ দিতে পারেন না এখানে। কারণ সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশে এই তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে।" শেষে বিচারপতি শিবকান্ত প্রসাদ রায়দান স্থগিত রাখেন। ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ ও তিন পুলিশকর্তাকে CBI জিজ্ঞাসাবাদের উপর স্থগিতাদেশ দেন রায়দান পর্যন্ত।

ABOUT THE AUTHOR

...view details