কলকাতা, 29 মার্চ: ঈশ্বর গুপ্ত ব্রিজ থেকে টাকা তোলার (Money Collection) বিষয়ে কল্যাণী থানার ভূমিকা নিয়ে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। বিচারপতি মান্থার নির্দেশ, এক্ষেত্রে ওসির ভূমিকা তদন্তকারী অফিসারদের লক্ষ্য রাখতে হবে। এফআইআর (FIR) দায়ের করে তদন্ত শুরু করবে সিআইডি (CID)। 13 এপ্রিল আদালতে পরবর্তী শুনানির দিন সিআইডিকে তদন্ত সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা করতে হবে। সিআইডির তদন্ত রিপোর্টে খুশি না-হলে আদালত পরবর্তীকালে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে, এমনটাই মন্তব্য বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার। কল্যাণী থানার ওসি অনির্বাণ বসুর ভূমিকা নিয়েও এফআইআর দায়ের করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
কল্যাণী পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের অধীনস্থ ঈশ্বরগুপ্ত সেতু। নদিয়া ও হুগলির মধ্যে সংযোগকারী এই সেতু দিয়ে বহু মানুষ ও যানবাহনের নিত্য যাতায়াত। বেশ কয়েকবার এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুরমাতা লক্ষ্মী ওঁরাও-এর কাছে অভিযোগ আসে, ওই সেতুতে কল্যাণী থানার ওসির নির্দেশে সিভিক পুলিশরা যানবাহন থেকে তোলা আদায় করছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে কাউন্সিলর আরও জানতে পারেন যে, ওই টাকা তোলার জন্য কল্যাণী এলাকায় বালির দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
খবর পেয়ে গতবছর 8 অক্টোবর পৌরমাতা লক্ষ্মী ওরাওঁ হঠাৎ ঈশ্বরগুপ্ত সেতু পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনের সময় তিনি হাতেনাতে চার সিভিক পুলিশকে টাকা তোলার সময় ধরে ফেলেন। ওই সিভিক পুলিশদের কাছ থেকে 800 টাকা এবং একটি হিসেবের খাতাও উদ্ধার করেন তিনি। বিষয়টি তৎক্ষণাৎ তৎকালীন জেলার পুলিশ সুপারকে জানান তিনি। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পুলিশ সুপারের কাছে তথ্য জানার অধিকার আইনে তিনি আবেদন জানান। ওই আবেদনে তিনি জানতে চান, তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:চাকরি যেতে পারে প্রায় 43 হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের, ইঙ্গিত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের
পুলিশ সুপার এই আবেদনের প্রেক্ষিতে কল্যাণী থানার কাছে রিপোর্ট তলব করেন। পুলিশ সুপারের ভূমিকায় খুশি না-হয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আবেদনকারী পুরমাতা লক্ষ্মী ওরাওঁ। তাঁর দাবি, যে থানার ওসি এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তার কাছেই রিপোর্ট করেছেন পুলিশ সুপার। এদিন সরকারি আইনজীবী আদালতে জানান, ঈশ্বর গুপ্ত সেতু থেকে যে টাকা তোলার অভিযোগ করা হয়েছে তার সঙ্গে কল্যাণী থানার পুলিশের কোনও সম্পর্ক নেই। সেতুর টোল যারা আদায় করেন তারাই ওই টাকা নিচ্ছিল। যে হিসেবের খাতার কথা বলা হচ্ছে সেটি একটি চায়ের দোকানের খাতা। উদ্ধার হওয়া 800 টাকা ইতিমধ্যে নিম্ন আদালতে পুলিশ অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়েছে। বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার মন্তব্য, হিসেবের কাগজে গাড়ির নম্বর ও কত টাকা তোলা হয়েছে তার উল্লেখ রয়েছে, সেটি কী করে চায়ের দোকানের খাতা হয়। একজন পুরমাতা যখন অভিযোগ করেছেন তখন বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এতে পুলিশের গাফিলতি আছে বলে আদালত মনে করেছে। এরপরেই কল্যাণী থানার ওসির ভূমিকা নিয়ে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের।