কলকাতা, 3 জুন : রাজভবন থেকে আজ সাংবাদিক বৈঠক করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ৷ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য নিয়োগকে ঘিরে ফের চরমে উঠেছে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত । সেই প্রসঙ্গেই আজ সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি ৷ জানিয়ে দিলেন, "সহ-উপাচার্য বিতর্ককে আমি বোতলবন্দী করে দিয়েছি ৷ পুরো বিষয়টা আমি মুখ্যমন্ত্রীর বিবেকের উপর ছেড়ে দিয়েছি ৷"
রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত প্রকাশ্যে এলেও তিনি বৈঠকে জানালেন আজ সকালেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে ৷ কথা বলে তিনি খুশি বলেই তাঁর কথাতে বুঝিয়ে দিলেন ৷ বললেন, "আজ সকালেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে ৷ তিনি এ বিষয়ে পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন ৷ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আরও আলোচনা চালিয়ে যেতে চাই ৷ রাজনীতির ঊর্ধ্বে এই আলোচনা চালিয়ে যেতে চাই ৷"
পাশাপাশি, শিক্ষা নিয়ে রাজ্যে তৈরি সমালোচনার বিষয়েও কথা বললেন রাজ্যপাল ৷ তিনি জানিয়ে দিলেন, "এখন শিক্ষাক্ষেত্রে বিতর্কের সময় নয় ৷ এধরনের বিতর্ক শিক্ষাক্ষেত্রের উপকারে আসবে না ৷ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমিও মনে করি, এই ধরনের বিতর্ক অবাঞ্ছিত ৷ মুখ্যমন্ত্রী কিছু পরামর্শ দিয়েছেন, সেটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই ৷"
একদিকে কোরোনা সংক্রমণ, অন্যদিকে আমফান ঘূর্ণিঝড় ৷ রাজ্যের এই কঠিন পরিস্থিতিতে রাজ্যের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে চান বলেই বৈঠকে জানালেন ধনকড় ৷ সঙ্গে সকলকে রাজ্যের পাশে থাকার আবেদনও করলেন তিনি ৷ বললেন, "এই পরিস্থিতিতে সবাই রাজ্যের তহবিলে সাহায্য করুন ৷ এই অবস্থায় সবাইকে সাহায্য করতে হবে ৷ সবাইকে সহযোগিতা করে চলতে হবে ৷ রাজ্যবাসীর জন্য ভাবা আমার সাংবিধানিক কর্তব্য ৷" এই সংকটের সময় রাজ্য-কেন্দ্রকে এক হয়ে কাজ করতে হবে বলে মনে করছেন রাজ্যপাল ৷
প্রসঙ্গত, 21 ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেন সহ উপাচার্য মহুয়া সরকার । তারপর থেকে সহ-উপাচার্যের পদ শূন্য আছে । সেইমতো উচ্চশিক্ষা দপ্তরের তরফে আচার্যের কাছে সহ উপাচার্য পদের জন্য দু'জনের নামের প্যানেল পাঠানো হয় । সেই প্যানেলে থাকা দু'জনের নামের মধ্যে কোনও নামেই সায় দেননি আচার্য জগদীপ ধনকড় । বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক গৌতম চন্দ্রের নাম প্রস্তাব করেন রাজ্যপাল ।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য নিয়োগকে কেন্দ্র করে নতুন করে মতানৈক্য তৈরি হয়েছিল রাজ্যপাল ও শিক্ষা দপ্তরের মধ্যে ৷ তবে, আজ বিষয়টি নিয়ে নিজের মত পরিষ্কার করে জানিয়ে দিলেন রাজ্যপাল ৷ রাজ্যের সঙ্গে সংঘাত যেন কিছুটা শেষ করতে চাইলেন তিনি ৷ পরিষ্কার করে জানিয়ে দিলেন, এই বিতর্ক পড়ুয়াদের কোনও উপকারে লাগবে না ৷ তাই এই বিতর্ক এখানে শেষ করাই শ্রেয় ৷