কলকাতা, 13 এপ্রিল : কোরোনা আক্রান্ত সন্দেহে কোয়ারান্টাইনে থাকা মানুষদের পালিয়ে যাওয়ার একাধিক ঘটনা ইতিমধ্য়েই প্রকাশ্য়ে এসেছে । এবার এই সমস্ত মানুষদের পালানো আটকাতে নজরদারির পথ খুঁজছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশন'স ইনোভেশন কাউন্সিলের (IIC) তরফে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে পড়ুয়াদের জন্য। যেখানে তাঁদের কোয়ারান্টাইনে থাকা মানুষদের উপর নজরদারির জন্য একটি স্মার্ট মোবাইল অ্যাপ তৈরি করতে বলা হয়েছে।
এবিষয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের IIC-র প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক অমিতাভ গুপ্ত বলেন, "পড়ুয়ারা তো এখন বাড়িতে বসে আছে। বাড়িতে বসে থাকলে পড়াশোনার খামতি হচ্ছে তা নয়। কিন্তু তাদেরকে দুটো চ্যালেঞ্জ দেওয়া হয়েছে। সেটা তারা বাড়িতে বসেই করতে পারবে। এর মধ্যে একটা চ্যালেঞ্জ খুব ইন্টারেস্টিং। ধরা যাক, কাউকে কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছে। একটা ফোনকে মাস্টার ফোন করতে হবে। কোয়ারান্টাইনে থাকা মানুষদের ফোনগুলি ব্লু-টুথের মাধ্যমে সেই মাস্টার ফোনের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকবে। কেউ যদি তাঁর ফোন নিয়ে কোয়ারান্টাইন সেন্টারের বাইরে চলে যায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ব্লু-টুথ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। বন্ধ হয়ে গেলেই বোঝা যাবে সে জ়োনের বাইরে চলে গেছে। তারপরই মাস্টার ফোন থেকে প্রশাসনের কাছে খবর চলে যাবে। বা কোয়ান্টাইনে থাকা মানুষের ফোনে অন্যান্য অনেক ব্লু-টুথ ডিটেক্ট করা গেলেও বোঝা যাবে যে, সে অনেক মানুষের কাছাকাছি রয়েছেন। এটা একটা সিম্পল অ্যাপ। পড়ুয়ারা বাড়িতে বসে তৈরি করতে পারবে। আসল গবেষণার জায়গা হল সেটা ফলস অ্যালার্ম যেন না হয়। এই প্রযুক্তিটা যেন যথাযথ ও বিশ্বাসযোগ্য হয় সেটা দেখতে হবে।"
লকডাউন চলাকালীন সময়টাকে ব্যবহার করে পড়ুয়ারা যাতে নতুন কিছু আবিষ্কার করতে পারে সেই উদ্দেশে এই উদ্যোগ বলে, জানাচ্ছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, "ছাত্রদের মধ্যে অনেক নতুন, সৃজনশীল ধারণা রয়েছে। আমরা চাইছি ওরা ভাবুক। ওরা গতানুগতিক পড়াশোনা, গবেষণার বাইরেও নতুন কিছু ভাবুক । সৃষ্টি করুক । আমরা সেটা নিয়ে প্রচার করব, প্রয়োজনে ফান্ডিং করব। তিনি আরও বলেন, "COVID-19 প্রতিরোধে বহু মানুষকে কোয়ারান্টাইনে থাকতে হচ্ছে। যাঁদেরকে কোয়ারান্টাইন করা হচ্ছে, তাঁদেরকে যদি একটা অ্যাপের মাধ্যমে সংযুক্ত রাখা যায়। কোনও সংকেতের মাধ্যমে তাঁদেরকে যদি কোয়ারান্টাইন ভাঙতে দেখা যায়, তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারবে প্রশাসন। এটাকে কোয়ারান্টাইন মনিটরিং ডিভাইসও বলা যেতে পারে।"
এছাড়া, মোবাইল বেসড পোর্টেবল ECG ডিভাইস তৈরি করতে বলা হয়েছে পড়ুয়াদের। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, "আমাদের ধারণা, প্রথমত, পোর্টেবল ECG লিফ্ট বা প্রপসগুলি ছোট পোর্টেবল ডিভাইসে কানেক্ট করা থাকবে। যেটা ব্লু-টুথের মাধ্যমে মোবাইলের সঙ্গে কানেক্ট থাকবে। ECG-র জন্য আলাদা একটা মেশিন লাগে। আমরা চাইছি, মোবাইলে একটা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ থাকবে। তার মাধ্যমে আমরা ECG মনিনিটরিং করতে পারব। ECG-র যে গ্রাফগুলি সেগুলি আমরা মোবাইলে দেখতে পারব। দরকার পড়লে কোনও চিকিৎসক সেটা দেখে ডায়াগনসিস করতে পারবেন। 24 ঘণ্টা রেকর্ডিং করা যাবে। সেটা চিকিৎসকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া যাবে। মানে পোর্টেবল মোবাইল কানেক্টেড ECG মেশিন একটি। এটি পোর্টেবল হবে, কম খরচে তৈরি করা যাবে। ফলে, গোটা ECG মেশিনটাকেই ডিসপোজ করে দেওয়া যাবে। সব সময় ECG মনিটরিং সম্ভব নয়। বাইরে থেকে ECG মেশিন এনে সেটা করতে হবে। এটা হলে রেগুলার বেসিসে মনিটরিং করা যাবে। এর একটা বিস্তীর্ণ প্রয়োগক্ষেত্র রয়েছে ।"