কলকাতা, 9 জুন: পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা । ইতিমধ্যেই নির্বাচন নিয়ে আদালত পর্যন্ত গিয়েছে বিষয়টি । রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর করা মামলায় শুক্রবার একাধিক পর্যবেক্ষণ দিয়েছে আদালত । বিশেষ করে মনোনয়ন পেশের সময় কম দেওয়া হয়েছে বলেই মনে করছে আদালত ৷
আদালতের পর্যবেক্ষণকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও ৷ প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মনোনয়নের জন্য নির্বাচন কমিশন যে সময় দিয়েছে তা যথেষ্ট নয় । কমিশনেরই দায়িত্ব সমস্ত প্রার্থীকে মনোনয়নের সুযোগ করে দেওয়া । এত কম সময়ে প্রায় 75 হাজারের বেশি আসনে মনোনয়ন হবে কীভাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায় ।’’
বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, সর্বদলীয় বৈঠক ছাড়াই এবার নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছে ৷ এই নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘সর্বদল বৈঠক ডাকবে কী, ডাকবে না, এটা সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন কমিশনারের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয় । এই নিয়ে কারও কিছু বলার থাকতে পারে না । কিন্তু দীর্ঘদিনের রীতি যেকোনও নির্বাচনের আগে কমিশন সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে একটা বৈঠক করে । এটা কিছুটা ওই রাজনৈতিক দলগুলির ভোট প্রস্তুতিরই অংশ বলা যেতে পারে । সেই জায়গা থেকে এই সুযোগ না পাওয়ায় একটা সমস্যা তো হয় ।’’
আর পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি নিয়ে তাঁর বক্তব্য, বিগত নির্বাচনগুলিতে যা হয়েছে, তার উপর ভিত্তি করে বিরোধীরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানাচ্ছে । তাদের দাবি যথেষ্ট সঙ্গত । তবে এটাও ঠিক, নির্বাচন রাজ্য পুলিশে করবে না কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে, সেটা কমিশনের নিজস্ব এক্তিয়ার ভুক্ত জায়গা ।
অন্যদিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের হাতেও কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের মতোই ক্ষমতা দেওয়া আছে । যেটা দেখা যাচ্ছে যিনি নতুন দায়িত্ব নিয়ে এসেছেন, তিনি সবকিছু বোঝার আগেই পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে শুরু করে সবটাই ঘোষণা করে দিয়েছেন । তিনি চিফ সেক্রেটারি থাকলেও এই দফতরটাতো আলাদা, তাই বুঝতে সময় লাগে । এর ফলে অনেক রাজনৈতিক দলই অপ্রস্তুতির মধ্যে পড়েছে ।’’