কলকাতা, 6 জুন : এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে প্রায় 8 সেন্টিমিটার লম্বা একটি চুম্বক বের করল চিকিৎসকরা । নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গ্যাস্ট্রো-এন্টেরোলজি ইউনিটের ঘটনা । চুম্বকটির ওজন 50 গ্রামের বেশি বলে জানায় চিকিৎসকরা । শিশুটি ভালো আছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা ।
শিশুটির নাম উৎসবকুমার সিনহা । বয়স সাত । সে ধানবাদের বাসিন্দা । জানা যায়, খেলতে গিয়ে চুম্বকটি গিলে ফেলেছিল শিশুটি । আজ তাকে নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গ্যাস্ট্রো-এন্টেরোলজি ইউনিটের বহির্বিভাগে নিয়ে আসেন পরিজনরা । এই ইউনিটে রয়েছেন চিকিৎসক পিনাকি রায় এবং চিকিৎসক মানসকুমার মণ্ডল । পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এবং রোগীর সঙ্গে থাকা এক্সরে প্লেট দেখে দ্রুত এন্ডোসকপি করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা । শেষ পর্যন্ত 15-20 মিনিটের চেষ্টায় পাকস্থলী থেকে ওই চুম্বকটি বের করতে সমর্থ হন তাঁরা ।
পাকস্থলী থেকে বের হওয়া প্রায় ৮ সেমি লম্বা চুম্বক চিকিৎসক পিনাকি রায় বলেন, "এই ধরনের ফরেন বডি পেট থেকে বের করা না হলে ভবিষ্যতে নাড়িভুঁড়ির পথ বন্ধ করে দেয় । এক্ষেত্রে জরুরি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয় । পেট কেটে বড় ধরনের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তখন বের করতে হয় ফরেন বডি । এক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কাও থেকে যায় ।" 7 বছর বয়সি এই শিশুর পেট থেকে চুম্বকটি বের করার জন্য অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছিল । তবে, অস্ত্রোপচার না করে এন্ডোস্কপির মাধ্যমে চুম্বকটি বের করা হয়েছে । এই বিষয়ে চিকিৎসক পিনাকি রায় বলেন, "রোগীকে অজ্ঞান করে এন্ডোসকপির মাধ্যমে কাটাছেঁড়া না করে এবং রক্তপাতহীন ভাবে চুম্বকটি বের করা হয়েছে । রোগী এখন ভালো আছে । বাড়ি ফিরে গেছে ।"
পেট কেটে বড় ধরনের অস্ত্রোপচার না করে যে পদ্ধতিতে চুম্বকটি বের করা হয়েছে ডাক্তারি ভাষায় তার নাম এন্ডোস্কপিক থেরাপিউটিক প্রসিডিওর । এই পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে রোগীর সুরক্ষার বিষয়ে একপ্রকার নিশ্চিত থাকতে পারেন চিকিৎসকরা । চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই পদ্ধতিটি রোগীর পক্ষে উপকারী । তবে, এই পদ্ধতি ব্যবহারের বিষয়টি কঠিন অর্থাৎ, টেকনিক্যালি ডিফিকাল্ট । যে চুম্বকটি গিলে ফেলেছিল এই শিশুটি, তা নিউরোলজিক্যাল সমস্যায় মেডিটেশনের জন্য ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা ।