কলকাতা, 29 মে: পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের 31টি জীবনবিমা পলিসির হদিশ আগেই পেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা । সেই পলিসির কাগজপত্র ঘাঁটতে গিয়ে গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, পার্থর প্রতিটি এলআইসি-র নমিনিতে নাম ছিল তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের । সোমবার আদালতে এই বিষয়টিই তুলে ধরে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ৷ তাদের প্রশ্ন, যদি দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয়ের সঙ্গে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের কোনও যোগ না থাকে, তবে সে ক্ষেত্রে কেন তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন না ?
দীর্ঘ 10 মাস পর অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে আজ নগর দায়রা আদালতে সশরীরে হাজির করা হয় । সেখানেই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবীর তরফ থেকে বারবার দাবি করা হয় যে, অর্পিতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন । এই দাবির পালটা সওয়াল করে আদালতে ইডির আইনজীবীদের তরফ থেকে দাবি করা হয় যে, যদি অর্পিতা মুখোপাধ্যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কোনওরকম দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত না-ই থেকে থাকেন, তবে কীভাবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের 31টি এলআইসি পলিসির নমিনিতে নাম থাকতে পারে অর্পিতার ?
সে ক্ষেত্রে অর্পিতার আইনজীবীর তরফ থেকে বলা হয় যে, নমিনিতে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সই থাকলেও সেখানে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তিনি কাকু বলে সম্বোধন করেছেন । আইনজীবীদের তরফ থেকে দাবি করা হয়, যদি অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এই সকল দুর্নীতির বিষয়ে কিছুই না জেনে থাকেন এবং তিনি গোটা পরিস্থিতির শিকার হয়ে থাকেন, তবে তিনি কেন পুরো বিষয়টি আগে বুঝতে পারলেন না ? এবং কেন তিনি আইনের সাহায্য নিয়ে অভিযোগ দায়ের করলেন না ?
এ দিন 10 মাস পর অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে নগর দায়রা আদালতে পেশ করা হয় । আদালতে স্পষ্টভাবে ইডির তরফ থেকে বলা হয় যে, এই দুর্নীতি কাণ্ডে অর্পিতা মুখোপাধ্যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সমানভাবে দোষী । কারণ দুজনেই একত্রিত হয়ে প্রচুর সম্পত্তি কিনেছিলেন । সম্পত্তির হিসাব করতে গিয়ে বিভিন্ন জেলায় পার্থ এবং অর্পিতার নামে প্রচুর জমি-জায়গার হদিশ পান তদন্তকারীরা । সব কটি যৌথ সম্পত্তি । তিনটি সম্পত্তি শুধু অর্পিতার বলে দাবি করেছে ইডি । গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন যে, বাকি সম্পত্তির লাগাম ছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে ।
আরও পড়ুন:পার্থই মাস্টারমাইন্ড, অর্পিতা শুধু পরিস্থিতির শিকার; আদালতে দাবি আইনজীবীর