কলকাতা, ২৬ ফেব্রুয়ারি : শীত চলে যাওয়ার পরে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়ছিল। কিন্তু, আচমকা কালবৈশাখির জেরে এক ধাক্কায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেশ কয়েক ডিগ্রি নেমে গেছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টা আবহাওয়া একই রকম থাকবে।
আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় সুস্থ থাকার জন্য বিশেষ করে ছোটো এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। ফুসফুস সংক্রান্ত সমস্যা যাঁদের রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকা জরুরি।
চিকিৎসক অংশুমান মিত্র বলেন, "এই সময় ভাইরাল ইনফেকশন অর্থাৎ, ভাইরাস ঘটিত সংক্রমণ বেড়ে যায়। ফুসফুস সংক্রান্ত সমস্যা এবং ফ্লু জাতীয় সমস্যাও হয়ে থাকে। এর ফলে সর্দি, জ্বর, হাঁচি-কাশির সমস্যা বেড়ে যায়। ছোটোদের এবং বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা অন্যদের তুলনায় যেহেতু কম তাই জ্বর, হাঁচি-কাশি গা ব্যথার সমস্যা বেশি দেখা যেতে পারে। এই সময় পেটের সংক্রমণও বেড়ে যায়।"
তিনি আরও বলেন, "শীত শেষ হওয়ার সময় এবং গরম শুরু হওয়ার আগের সময় দু-এক পশলা বৃষ্টি অথবা নিম্নচাপের জন্যে সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ওঠানামা করে। এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে। স্বাভাবিক কারণেই এই সময় সুস্থ থাকার জন্য মানুষকে সচেতন হতে হবে। এই সময়ে যেহেতু বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়, তাই যদি কারও জ্বর হয় তবে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যাঁদের ফুসফুস সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে, হাঁচি-কাশি শুরু হলে যাতে সেটা নিউমোনিয়ার দিকে না পৌঁছায়, তার জন্য জল ফুটিয়ে যে বাষ্প মিলবে সেটা শ্বাস নেওয়া, গারগেল করা উচিত। এই সময় পেটের সমস্যা দেখা দিলে ORS ব্যবহার করতে হবে। পরিশ্রুত পানীয় জল ব্যবহার করতে হবে।"
চিকিৎসক অমিত ধবল বলেন, "যাঁদের ফুসফুস সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে, তাঁদের মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন জীবাণুর বৃদ্ধি এই সময় দেখা যায়। এর ফলে সাধারণ সর্দি-কাশির হওয়ার সম্ভাবনা যেমন থাকে, তেমনই নিউমোনিয়া হওয়ার আশঙ্কাও এই সময়ে বেড়ে যায়। পেটের সমস্যা এবং চর্ম রোগও এই সময় দেখা দেয়। কলকাতা সহ মফস্বলের বিভিন্ন স্থানে যেখানে নিকাশি ব্যবস্থা ভালো নয়, সেখানে বৃষ্টির জলের সঙ্গে অন্যান্য জল মিশে গিয়ে চর্ম রোগের আশঙ্কা দেখা দেয়। এসব থেকে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।"
চিকিৎসক অমিত ধবল আরো বলেন, "এই সময় মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। ঠান্ডা যাতে না লাগে তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, যেমন সঙ্গে শীতবস্ত্র রাখা যেতে পারে। জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। বেশি করে জল খাওয়া প্রয়োজন। প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে। তবে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অন্য কোনও ওষুধ নয়।"