কলকাতা, 20 জুন : কোরোনার মোকাবিলায় উপসর্গহীন অথবা সামান্য উপসর্গ রয়েছে এমন রোগীদের চিকিৎসার জন্য রাজ্যজুড়ে আরও সেফ হোম চালুর দাবি জানাল সরকারি চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন । তবে এরাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একাংশের তরফে এমন দাবিও তোলা হয়েছে, সেফ হোমে আয়ুষ শাখার চিকিৎসকদের দিয়ে কোরোনা রোগীদের চিকিৎসা করানো হচ্ছে । এর ফল হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে । সেই কারণে সেফ হোমগুলিতে মডার্ন মেডিসিনের চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়েছে ।
গতকাল স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, নিউটাউন এবং ট্যাংরায় অবস্থিত আরও দু'টি সেফ হোম মিলিয়ে 250টি বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে । এদিকে স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গতকাল পর্যন্ত রাজ্যে 106টি সেফ হোমের ব্যবস্থা করা হয়েছে । এই সেফ হোমগুলিতে মোট 6 হাজার 908টি বেড রয়েছে । গতকাল পর্যন্ত সেফ হোমে রয়েছে 281 জন কোরোনা রোগী । এই সব রোগীর ক্ষেত্রে হয় কোরোনার উপসর্গ নেই অথবা সামান্য উপসর্গ রয়েছে। যে সব কোরোনা রোগীর ক্ষেত্রে উপসর্গ নেই অথবা সামান্য উপসর্গ রয়েছে তাদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর । এদিকে রাজ্যের সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসকদের বিভিন্ন অংশ কোরোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কায় রয়েছে । আগামীদিনে পরিস্থিতি মোকাবিলার লক্ষ্যে উপসর্গহীন অথবা সামান্য উপসর্গ যুক্ত কোরোনা রোগীদের সুস্থ করে তুলতে আরও সেফ হোম চালুর দাবি জানানো হয়েছে ।
উপসর্গহীন কোরোনা রোগীদের চিকিৎসায় আরও সেফ হোম চালুর দাবি চিকিৎসক সংগঠনের
রাজ্যে সেফ হোমের সংখ্যা বাড়ানোর আবেদন করল সরকারি চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন ।
এরাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন, অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গলের সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, "সেফ হোমের ব্যবস্থা সরকারের থাকা উচিত। উপসর্গহীন রোগীদের যদি কোরোনা হাসপাতালে রাখা হয় তা হলে সিরিয়াস রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসা করা সম্ভব হবে না । কারণ উপসর্গহীন রোগীদের ভরতি করিয়ে যদি বেডগুলিকে ভরিয়ে দেওয়া হয় তা হলে সিরিয়াস রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা যেমন ব্যাহত হয়, তেমনই বেড না পেয়ে চিকিৎসা না পেয়ে তাঁদের মৃত্যুও হতে পারে ।" দেশে যা জনসংখ্যা এবং জনঘনত্ব, তাতে উপসর্গহীন অথবা সামান্য উপসর্গ রয়েছে এমন কোরোনা রোগীদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব নয় । অনেকের বাড়িতে পৃথক জায়গার অভাব রয়েছে । " তিনি আরও বলেন, "বাড়িতে থেকে চিকিৎসার জন্য কোনও কোরোনা রোগীর ক্ষেত্রে পৃথক ঘর বা তাঁকে দেখাশোনার জন্য তেমন কোনও মানুষ নাই থাকতে পারেন। এই সব মানুষের জন্য সরকারকেই ব্যবস্থা করতে হবে। সেফ হোমের জন্য স্টেডিয়াম, লজ সহ বিভিন্ন স্থানে ব্যবস্থা করা যেতে পারে।"
সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "রাজ্যজুড়ে আরও অনেক সেফ হোম চালু করা প্রয়োজন। সেখানে আয়ুষের চিকিৎসকদের দিয়ে উপসর্গহীন অথবা সামান্য উপসর্গ রয়েছে এমন কোরোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা করা হচ্ছে । এর ফলে সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে । প্রতিটি সেফ হোমে মডার্ন মেডিসিনের চিকিৎসকদের রাখা উচিত । প্রয়োজনে মডার্ন মেডিসিনের কোনও চিকিৎসকের অধীনে সেফ হোমগুলিতে আয়ুষের চিকিৎসকদের রাখা যেতে পারে, যাতে উপসর্গহীন অথবা সামান্য উপসর্গযুক্ত কোরোনা রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে মর্ডান মেডিসিনের চিকিৎসকরা আয়ুষ চিকিৎসকদের গাইড করতে পারেন ।"