পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

অবহেলায় রোগীমৃত্যু, 3 চিকিৎসক ও হাসপাতালকে 10 লাখ টাকা জরিমানা - kolkata

চিকিৎসার গাফিলতিতেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। রোগী পরিবারের অভিযোগ মানল দক্ষিণ 24 পরগনার ডিস্ট্রিক্ট ডিসপুটস রিড্রেসাল ফোরাম। অভিযুক্ত 3 চিকিৎস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে 10 লাখ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ছবিটি প্রতীকী

By

Published : Apr 3, 2019, 9:50 AM IST

Updated : Apr 3, 2019, 10:21 AM IST

কলকাতা, 3 এপ্রিল : ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছিল। কিন্তু, অস্ত্রোপচারের দু'মাস পর দেখা দেয় নতুন সমস্যা। বাঁ পা নাড়তে সম্পূর্ণ অক্ষম হয়ে পড়েন বছর 50-র রঞ্জন শীল। ফের ভরতি করা হয় মুকুন্দপুরের ওই হাসপাতালে। চিকিৎসকরা বলেছিলেন রোগীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তবুও তাঁকে রাখা হয়েছিল ICCU-তে। ক্রমে অবনতি হতে থাকে রঞ্জনের শারীরিক অবস্থার। মৃত্যু হয় তাঁর। এদিকে পরিবারের তরফে দক্ষিণ 24 পরগনার ডিস্ট্রিক্ট ডিসপুটস রিড্রেসাল ফোরামে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ জানান। তদন্তের পর অভিযোগের সত্যতা মেনে নিল ফোরাম। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও অভিযুক্ত 5 চিকিৎসকের মধ্যে 3 জনকে 10 লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বাকি 2 চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে ফোরাম। মুকুন্দপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, আদালতের নির্দেশের কপি হাতে পেলে নেওয়া হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।

2010 সালে ওপেন হার্ট সার্জারি হয় রঞ্জন শীলের। 2012-র অক্টোবরে তিনি বাঁ পা নাড়াতে অক্ষম হয়ে পড়েন। 2013 সালে রোগীর বুকে ব্যথা সহ শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। ওই বছরের অক্টোবরে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর মুকুন্দপুরের হাসপাতালে ভরতি করা হয়। চিকিৎসকরা জানান রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল, তবুও তাঁকে ICCU-তে রাখা হয়।

হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, রোগীর বুকে সংক্রমণ হয়েছে‌। তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। বুকে ফ্লুইড জমেছে। অ্যান্টিবায়োটিক এবং ফ্লুইড বের করে দেওয়ার মধ্য দিয়েই রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। 2013-র 29 অক্টোবর রোগীকে ICCU থেকে জেনেরাল ওয়ার্ডে দেওয়া হয়। তবে ফ্লুইড সম্পূর্ণ বের করা হয়নি তখনও। 2013-র 31 অক্টোবর 2 চিকিৎসক জানান, বাকি ফ্লুইড অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে বুক থেকে পরিষ্কার হয়ে যাবে। 2013-র 1 নভেম্বর অন্য এক চিকিৎসক বলেন, ছোটো একটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বাকি ফ্লুইড বের করে দেওয়া সম্ভব হবে। অস্ত্রোপচারের সম্মতি জানান রঞ্জন শীলের স্ত্রী। এর জন্য চিকিৎসার প্যাকেজে (1 লাখ 70 হাজার টাকা) ছাড়াও দেড় লাখ টাকা জমা দেন তিনি। 5 নভেম্বর বিকালে অস্ত্রোপচার হয়। পরদিন রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখা দেয়। তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন তিনি।

7 নভেম্বর চিকিৎসকরা জানান, ফুসফুসের রক্ত জমে গিয়েছে। এর জন্য আরও একটি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। পরদিন এই অস্ত্রোপচার হয়। 9 নভেম্বর দেখা যায় অস্ত্রোপচারের স্থান থেকে রক্ত বেরিয়ে আসছে। 10 তারিখ হেমাটোলজিস্টের কাছে এবিষয়ে পরামর্শ নেওয়া হয়। ইউরিন (মূত্রত্যাগ) কম হওয়ার জন্য ডায়ালিসিসের পরামর্শ নেন এক চিকিৎসক। যদিও অপর এক চিকিৎসক এই ডায়ালিসিস না করানোরও পরামর্শ দিয়েছিলেন। 11 নভেম্বর, বেলা 2 টো 20 মিনিট নাগাদ রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়।

2015-র 21 জানুয়ারি দক্ষিণ 24পরগনার ডিস্ট্রিক্ট ডিসপুটস রিড্রেসাল ফোরামে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ আনে রঞ্জন শীলের। অভিযোগের ভিত্তিতে চলতি বছরের 19 মার্চ অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে ফোরাম। এই ঘটনায় 3 চিকিৎসকের বিরুদ্ধে 10 লাখ টাকা আর্থিক জরিমানার নির্দেশ দিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডিস্ট্রিক্ট ডিসপুটস রিড্রেসাল ফোরাম।

Last Updated : Apr 3, 2019, 10:21 AM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details