কলকাতা, 23 নভেম্বর: মাঝেমধ্যেই কংগ্রেস-সিপিএমের নেতারা, তার সঙ্গে আরএসএসের সুসম্পর্কের কথা বলেন। তাদের মুখে এমনও শোনা যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আরএসএসের আঁতাত রয়েছে। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়াম থেকে সেই আরএসএসের উদ্দেশে বার্তা দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন নাম না করে আরএসএস-এর উদ্দেশে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভানেত্রী বলেন, "আপনাদের কাছে একটাই অনুরোধ দেশের সবচেয়ে ক্ষতিকারক লোকটিকে আর সমর্থন করবেন না।"
দেশের শাসক বিজেপির সঙ্গে আরএসএসের সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়। সরাসরি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ না করলেও বিজেপির সাংগঠনিক কাঠামো ও নীতি নির্ধারণে বরাবরই আরএসএস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছে। সেই সংগঠনের উদ্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এক্ষেত্রে তিনি দেশের সবচেয়ে ক্ষতিকারক ব্যক্তি বলতে নাম না করে আদতে যে প্রধানমন্ত্রী মোদিকেই উদ্ধৃতি করেতে চেয়েছেন তাও একরকম স্পষ্ট বলেই মনে করছে ওয়াকিবহল মহল ৷
এদিন কোন প্রসঙ্গে হঠাৎ একথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী ! এদিন বক্তব্য রাখতে উঠে ছট পুজোয় তাঁর যাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ আর সেই প্রসঙ্গে বলার সময়ই মমতা আরএসএস-এর প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তিনি বলেন, "কয়েকদিন আগেই ছট পুজোয় গঙ্গার ঘাটে গিয়েছিলাম। সেখানে দেখি লেখা আছে আরএসএস !" এর সঙ্গেই তাঁর সংযোজন, "আপনারা ধর্ম করুন আমার কোনও আপত্তি নেই ৷ আমার আপনাদের বিরুদ্ধে কিছু বলারও নেই। কিন্তু দেশের জন্য যে লোকটা সবচেয়ে ক্ষতিকারক তাঁকে আর সমর্থন করবেন না।"
এখানেই থামেননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ৷ রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের উদ্দেশে তাঁর অনুরোধ, "আপনারা বিভিন্ন সময় অনেককে সমর্থন করেছেন কিন্তু এই লোকটাকে প্লিজ সাপোর্ট করবেন না।" এদিন নাম না করে কংগ্রেস-সিপিএম-কে 'জগাই', 'মাধাই' বলেও আক্রমণ করতে শোনা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, "দেখলেই যেন মনে হয় খেতে আসছে।" এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ থেকে নাম না করে 'পাপিষ্ঠ' বলতেও শোনা গিয়েছে। কিন্তু এই পাপিষ্ঠ বা দেশের সবথেকে ক্ষতিকারক ব্যক্তি কারা সে কথা ভেঙে বলেননি মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক মহল মনে করছেন উভয় ক্ষেত্রেই মুখ্যমন্ত্রীর নিশানায় নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ।