কলকাতা, 20 এপ্রিল : করোনার ধাক্কা সামাল দিতে আগামী 7 দিনে শহরে এক হাজার শয্য়া বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিবের । সরকারি হাসপাতালে সুপারদের নিয়ে মঙ্গলবার রবীন্দ্রসদনে বৈঠকে বসেন তিনি । যেহেতু কলকাতা ও তার লাগোয়া অঞ্চলেই সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের ঘটনা ঘটছে, তাই এই বৈঠকে কলকাতায় সেফ হোমের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি, সরকারি হাসপাতালে কোভিড শয্য়ার সংখ্যা বাড়ানোর উপরেও জোর দিয়েছেন তিনি ।
এদিন মুখ্য সচিবের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, 220টি শয্য়া নিয়ে করোনা ওয়ার্ড চালু হবে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে । এছাড়া এমআর বাঙুর ও বালটিকুরি ইএসআই হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ভোট মিটলেই রাজ্যে করোনার বড় ঢেউ আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা । তাই আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে সরকার । সোমবারই রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতালের কর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন মুখ্যসচিব । তাঁদেরও শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । দরকারে পার্কিং স্পেস ও লবিতেও করোনা রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার ।
রাজ্যজুড়ে বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড বেডের আকাল চলছে । পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই চার সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করেছে রাজ্য সরকার । যেভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, তাতে বেসরকারি নার্সিংহোমে হাসপাতালগুলিতে বেড পাওয়া নিয়ে অত্যন্ত সংকট দেখা দিয়েছে । রাজ্যজুড়ে বেসরকারি হাসপাতালে 3,170টি শয্য়ার মধ্যে আপাতত ফাঁকা রয়েছে 600টি অর্থাৎ করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত শয্য়ার সিংহভাগই ভর্তি ।
বড় বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে করোনা শয্যাগুলি সম্পূর্ণ ভর্তি । ফাঁকা শয্যাগুলি মূলত ছোট নার্সিংহোম এবং হাসপাতালে রয়েছে । কীভাবে বেসরকারি হাসপাতালের শয্য়া সংখ্যা বাড়ানো যায়, তার জন্য বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে । স্বাস্থ্য সচিব সঞ্জয় বনশলের নেতৃত্বে এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে ।
এছাড়া এদিন কলকাতা পুরসভার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম । তিনি বলেন, "এসএসকেএম হাসপাতাল লাগোয়া উত্তীর্ণ ভবনে কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে । সেখানে থাকবে 10টি অ্যাম্বুল্যান্স। সেখানে ফোন করে কোয়ারান্টাইনের প্রয়োজনের কথা জানালে রোগীকে কাছাকাছি কোনও সেফ হোমে পৌঁছে দেবেন পুরসভার কর্মীরা ।" তিনি এও জানান, এসএসকেএম হাসপাতালের আসে পাশে যত সরকারি হাসপাতাল রয়েছে সব জায়গায় করোনা চিকিৎসায় শয্য়া সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে । মোটের উপর এদিন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে কোমর বেঁধে নেমে পড়ল রাজ্য প্রশাসন ।