কলকাতা, ১৭ মে : আর বাকি শুধু শেষ দফার ভোটগ্রহণ । তারপর ২৩ মে দেশের ৫৪৩টি আসনে ভোটগণনা হবে । এবার গণনা হবে পাঁচটি ধাপে ।
প্রথম গণনা হবে পোস্টাল ব্যালটের ভোট। ARO (অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার)-র নেতৃত্বে যে কেন্দ্রে রিটার্নিং অফিসার থাকবেন সেখানে এই পোস্টাল ব্যালট গণনা হবে । সারা রাজ্যে 42টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে 58টি গণনাকেন্দ্র ।
পোস্টাল ব্যালটের গণনার পর গণনা করা হবে সার্ভিস ভোটারদের ভোট । তিনটি খামের ভেতর থাকবে পোস্টাল ব্যালট । প্রথমে খোলা হবে বাইরের খাম, তারপরের খামের ভেতর থাকবে সার্ভিস ভোটারের ডিক্লেয়ারেশন এবং তৃতীয় খামে থাকবে পোস্টাল ব্যালট । এই খামের ভেতর পোস্টাল ব্যালটের সঙ্গে থাকবে QR কোড । এই কোডকে স্ক্যান করা হবে । যদি স্ক্যান মিলে যায় তবেই এই ভোট গণনা করা হবে ।
এরপরই গণনা করা হবে EVM । এর সঙ্গে থাকা কন্ট্রোল ইউনিট নিয়ে আসা হবে স্ট্রং রুম থেকে । প্রত্যেকটি গণনাকেন্দ্র যার ভিতর কাউন্টিং হল থাকবে । একটি লোকসভা আসনের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার প্রত্যেকটির জন্য প্রায় ১৪ টি টেবিল । গণনা হবে ১৫ থেকে ১৬ রাউন্ড। এভাবেই কন্ট্রোল ইউনিটের গণনা করা হবে। এই ক্ষেত্রে যদি কোনও কন্ট্রোল ইউনিট বিগড়ে যায় তখন সেই কন্ট্রোল ইউনিটের VVPAT গণনা করা হবে ।
কন্ট্রোল ইউনিটের গণনা শেষ হয়ে গেলে তারপর শুরু হবে VVPAT-র গণনা। লটারির মাধ্যমে প্রত্যেক বিধানসভা থেকে পাঁচটি করে VVPAT স্ট্রং রুম থেকে নিয়ে আসা হবে কাউন্টিং হলের ভেতর। তবে গণনা হবে এক সঙ্গেই। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে, আনুমানিকভাবে প্রত্যেক বিধানসভার গণনা করতে সময় লাগতে পারে 2 ঘণ্টা ।
১৯৬১ সালের নির্বাচন কমিশনের ৫৬ ডি ধারা অনুযায়ী, কোনও প্রার্থী বা তাঁর এজেন্ট রিকাউন্টিং চাইতে পারেন । রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিতভাবে কারণ দেখিয়ে আবেদন করতে হবে । রিটার্নিং অফিসার চাইলে তা গ্রাহ্য করতেও পারেন আবার নাও করতে পারেন ।
এই পাঁচটি ধাপে গণনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন । গণনাকেন্দ্রে থাকবে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা ।
স্ট্রং রুমে থাকবে প্যারা মিলিটারি ফোর্স । এক প্লাটুনের কিছু বেশি সংখ্যায় থাকবে এই বাহিনী । স্ট্রং রুমের লাগোয়া থাকবে কাউন্টিং হল । কাউন্টিং হলের ভেতর থাকবে CAPF । একটি রাউন্ডের গণনা শেষ হয়ে যাওয়ার পর রিটার্নিং অফিসার সেই ফলাফল যোগ করে একদিকে বোর্ডে লিখে দেবেন । অন্যদিকে বাইরে মাইকের সাহায্যে তা ঘোষণা করা হবে । ঘোষণা শেষ হওয়ার পর তারপরই দ্বিতীয় রাউন্ডের জন্য স্ট্রং রুম থেকে নতুন কন্ট্রোল ইউনিট আনা হবে কাউন্টিং হলের ভিতর। কাউন্টিং হলের বাইরে থাকবে রাজ্য পুলিশের সশস্ত্র বাহিনী । এর বাইরে থাকবে কেবলমাত্র সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের বসার জায়গা।
এই জায়গা থেকে 100 মিটার দূরে থাকবে পেডেস্ট্রিয়ান জ়োন। যেখানে থাকবেন পুলিশ আধিকারিক ও ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের আধিকারিকরা । ওই চত্বরে কোনও গাড়ি-চলাচল করবে না। সাধারণ মানুষ পায়ে হেঁটে চলে যেতে পারবেন। পেডেস্ট্রিয়ান জ়োনের বাইরে 144 ধারা বলবৎ করা হবে গণনার দিন সকাল থেকে । এই একই নিয়ম গোটা দেশেই লাগু থাকবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন । কোনওরকম বিশৃঙ্খলা যাতে না হয় সেদিকে কড়া নজর থাকছে নির্বাচন কমিশনের ।