কলকাতা, 7 এপ্রিল : কোরোনা পরিস্থিতির আগে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের একাধিক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছিল। আবার কিছু নিয়োগ প্রক্রিয়া নতুন করে শুরুর কথাও ভাবছিল শিক্ষা দপ্তর। কিন্তু, বর্তমানে নিয়োগ নিয়ে কোনও ভাবনাচিন্তাই নেই শিক্ষা দপ্তরের। এখন যে পরিস্থিতি চলছে তাতে মানুষকে সুস্থ রাখাটাই প্রধান লক্ষ্য। আজ একথা সাফ জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
দেশজুড়ে চলছে লকডাউন । কোরোনা প্রতিরোধ করতে এই লকডাউনের জেরে থমকে গেছে বহু প্রক্রিয়া । এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষক নিয়োগও । এই পরিস্থিতি তৈরির আগে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, কলকাতা পৌরনিগমের নির্বাচনের পর টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট (TET) পরীক্ষা হবে । এদিকে উচ্চ প্রাথমিক স্তরের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে একটি মামলা হাইকোর্টে বিচারাধীন ছিল । আর কয়েকটি শুনানি হলে একটি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ পাওয়ার পর নিয়োগ প্রক্রিয়া আবার শুরু হওয়ার আশায় ছিলেন রাজ্যের উচ্চ প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীরা । কিন্তু, কোরোনা পরিস্থিতিতে থমকে যায় কলকাতা পৌরনিগমের ভোট, বন্ধ হয়ে যায় হাইকোর্ট । ফলে, দু'টি ক্ষেত্রেই থমকে যায় প্রক্রিয়া ।
অন্যদিকে, রাজ্যের কলেজগুলির অস্থায়ী শিক্ষকদের একটি নতুন পদের ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার । স্টেট এডেড কলেজ টিচার (SACT) নামক সেই পদে নিয়োগের জন্য বিকাশ ভবনে চলছিল নথি যাচাই প্রক্রিয়া । কোরোনা পরিস্থিতির কারণে প্রথমে সশরীরে বিকাশ ভবনে গিয়ে সেই নথি যাচাই প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়া হয় । পরিবর্তে অনলাইনে এই নথি যাচাই প্রক্রিয়া হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী । কিন্তু তারপর লকডাউনের কারণে তাও চলে যায় বিশ বাঁও জলে ।
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দপ্তর কী ভাবছে ? লকডাউনের পরে কি আবার নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করার কথা ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে ? শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "এখন নিয়োগ নিয়ে আমরা ভাবছিই না । এখন যা অবস্থা আমরা ওটা নিয়ে ভাবছি । যখন ভাববার সময় আসবে তখন দেখব এই সব ।" তিনি আরও বলেন, "এখন নিয়োগ নিয়ে কী করে ভাবব ? লোক বাঁচবে কিনা জানি না । যাকে নিয়োগ করা হবে সে বেঁচে থাকবে কি না জানি না।" মূলত, কোরোনার প্রকোপ থেকে মানুষকে বাঁচানো এবং মানুষকে সুস্থ রাখার প্রতিই এখন নজর রয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী ।
অন্যদিকে, অর্থ দপ্তর থেকে গত 2 এপ্রিল একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে । যেখানে বলা হয়েছে, কোরোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে । 21 দিন লকডাউনের কারণেও রাজ্যের অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে । এই পরিস্থিতিতে অর্থ দপ্তরের অনুমোদন ছাড়া কোনও কাজ করা যাবে না । সেখানে বলা হয়েছে, অর্থ দপ্তরের অনুমতি ছাড়া কোনও নিয়োগ করা যাবে না । 30 জুন পর্যন্ত এই নির্দেশিকা লাগু থাকবে । যা নিয়ে রীতিমতো হতাশায় রয়েছেন উচ্চ প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীরা ।