কলকাতা, ১ মার্চ : ক্যানসারে থেকে মুক্তি পেলেও বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন নীলগিরি মহারাজ। তাঁকে প্রাণে বাঁচানোর জন্য স্বরযন্ত্র অর্থাৎ ভয়েস বক্স অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বাদ দিতে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত NRS মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা ভয়েস প্রস্থেসিসের মাধ্যমে কৃত্রিম স্বরযন্ত্র বসালেন। যার জেরে প্রায় পাঁচবছর পর কথা বলতে পারছেন তিনি।
নাম নীলগিরি মহারাজ (৬৮)। তারাপীঠের বাসিন্দা। গলায় ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন, স্বরযন্ত্রে ক্যানসার পৌঁছে গেছে ফোর্থ স্টেজে। যে কারণে ২০১২ সালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর স্বরযন্ত্র বাদ দিতে হয়েছিল। কিন্তু আর্থিক দিক থেকে সামর্থ্য না থাকায় কৃত্রিম স্বরযন্ত্র বসাতে পারেননি তিনি।
২০১২ সালে অস্ত্রোপচার করেছিলেন চিকিৎসক মনোজ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "ভয়েস প্রস্থেসিসের জন্য দরকার ৫০ হাজার টাকা। এই মহারাজের এক শিষ্যই ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন সেই টাকা। এর ফলে ২০১২-তে ভয়েস প্রস্থেসিস করা হয়েছিল। ভয়েস প্রস্থেসিসের পরে এক থেকে দু'বছর পর্যন্ত ঠিক থাকে। তারপর আবার ভয়েস প্রস্থেসিস করতে হয়। ২০১২-তে ভয়েস প্রস্থেসিসের পরে দুই বছর কথা বলতে পেরেছিলেন নীলগিরি মহারাজ।"
পাঁচবছর পর আবার চিকিৎসক মনোজ মুখোপাধ্যায়ের কাছে আসেন নীলগিরিবাবু। মনোজবাবু এখন NRS-র চিকিৎসক। ২১ ফেব্রুয়ারি নীলগিরি মহারাজকে ভর্তি নেওয়া হয়। কিন্তু ভয়েস প্রস্থেসিসের জন্য খরচ হিসাবে ৫০ হাজার টাকার প্রয়োজন। বিনামূল্যে যাতে এই পরিষেবা দেওয়া যায় তার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার বিনামূল্যে নীলগিরি মহারাজের গলায় ভয়েস প্রস্থেসিস করা হয়। চিকিৎসক মনোজ মুখোপাধ্যায় বলেন, "রোগী এখন কথা বলতে পারছেন। তাঁকে আজ হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে।" স্বাভাবিক কারণেই অত্যন্ত খুশি নীলগিরি মহারাজ। তাঁর কথায়, "এখন আমি খুব ভালো আছি।"