কলকাতা, 3 জানুয়ারি:পুলিশের তদন্তে ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট। তার জেরে আদালতের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন ব্যরাকপুরের পুলিশ কমিশনার। তদন্তে গাফিলতি কেন ? আদালতের এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হল অলোক রাজোরিয়াকে। শুনানির একটি অংশে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ সরাসরি প্রশ্ন করে "পুলিশ আদৌ কি খুনের তদন্ত করছিল?"। রাজ্যে এমন সিপি ও এই ধরনের তদন্তকারী অফিসার থাকলে তদন্তের অবস্থা কী হবে তা নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করে বেঞ্চ।
বিচারপতি দেবাংশু বসাক বুধবার বিদ্রুপ করে বলেন, "যাঁরা তদন্ত করছেন তাঁদের প্রত্যেককে পুলিশের মেডেল দেওয়া উচিৎ। রাজ্যের গর্ব তো আপনারা ৷" তাঁর কথায়, "পুলিশের তদন্তের গতিপ্রকৃতি দেখেই বোঝা যাচ্ছে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে পুলিশের ভূমিকা কী! এই ধরনের তদন্তর সঙ্গে যুক্ত টিটাগড় থানার তদন্তকারী অফিসার ও ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারকে পুলিশ মেডেল দেওয়া উচিত।" উল্লেখ্য, টিটাগড় থানার অন্তর্গত বাড়িওয়ালা- ভাড়াটের সংঘাতের ঘটনায় মৃত্যু হয় বাড়িওয়ালার পক্ষের এক সদস্যের। পুলিশের অভিযোগ দায়ের হয় ভাড়াটে বিরুদ্ধে।
বাড়িওয়ালার পক্ষ থেকে টিটাগড় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, বাড়িওয়ালা পক্ষের ওই সদস্যকে মারধর করে ছাদের উপর থেকে নীচে ফেলে দেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সরাসরি খুনের ধারা 302 যোগ না-করে 304 ধারা প্রয়োগ করে। অনিচ্ছাকৃত খুনের ক্ষেত্রে এই ধারা দেওয়া হয়। পুলিশের এই তদন্তের গতিপ্রকৃতি দেখে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। অভিযুক্ত আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। সেই মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতির প্রশ্ন কেন ঘটনায় 302 ধারা যোগ করা হয়নি।
সরকারের আইনজীবী আদালতে জানান, তদন্তের মধ্য দিয়ে যে সমস্ত তথ্য উদ্ধার হচ্ছে তাতে খুব শীঘ্রই 302 ধারা যোগ করা হবে। এতে বিচারপতি ক্ষুব্ধ হয়ে কমিশনারের উদ্দেশ্যে মন্তব্য করেন, বাড়িওয়ালার পক্ষ থেকে যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে সেখানে পরিষ্কার উল্লেখ রয়েছে উপর থেকে মারধর করে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এটা কী সরাসরি খুন অর্থাৎ 302 ধারা যোগের ক্ষেত্রে উপযুক্ত নয়? তাহলে পুলিশ প্রথমেই কেন এই ধারা যোগ করল না? আগামিকাল আবারও ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারকে আদালতে সশরীরে হাজিরা হয়ে জানাতে হবে, তদন্তের কোন পর্যায়ে তাদের মনে হয়েছে এই মামলায় 304 নয় 302 অর্থাৎ সরাসরি খুনের দ্বারা যুক্ত করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন:
- বিবাহিতা কন্যাও পরিবারের সদস্য, অবিলম্বে প্রাপ্য চাকরি দিতে নির্দেশ হাইকোর্টের
- শিক্ষক নিয়োগ, কামদুনি থেকে নাবালিকা নির্যাতিতার গর্ভপাতে অনুমতি! 23-এ হাইকোর্ট বিতর্কিত একাধিক রায়ে নজির গড়ল
- নবান্ন বাসস্ট্যান্ডের সামনে ডিএ-র দাবিতে ধরনা 3 নয়, একদিন করা যাবে; নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের