কলকাতা, ১৯ ফেব্রুয়ারি : বেলেঘাটার ২৯ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বাকে গর্ভপাতের অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আবেদনকারী তাঁর নিজের পছন্দ মতো বেসরকারি হাসপাতালে গর্ভপাত করাতে পারবেন বলে জানাল ডিভিশন বেঞ্চ।
ভ্রূণের শারীরিক ত্রুটির কথা তুলে ধরে গর্ভপাতের আবেদন জানিয়েছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু, ২৯ জানুয়ারি হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। পরে মামলাটি ওঠে ডিভিশন বেঞ্চে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও বিচারপতি অরিন্দম মুখার্জির ডিভিশন বেঞ্চ গতকাল অন্তঃসত্ত্বার আবেদন মঞ্জুর করেন। গর্ভপাতের অনুমতি দিতে গিয়ে বিচারপতিরা বলেন, গর্ভপাত না করালে বাচ্চা ও মায়ের জীবন যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে।
১৯৭১ সালের গর্ভপাত আইন অনুসারে, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ২১ সপ্তাহের মধ্যে কোনও মহিলা গর্ভপাত করাতে পারেন। তবে তারপর গর্ভপাতের জন্য আদালতের অনুমতি লাগে।
২১ জানুয়ারি গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বেলেঘাটার বাসিন্দা ওই মহিলা ও তাঁর স্বামী। ২৫ সপ্তাহের বেশি হয়ে গেছিল ভ্রূণের বয়স। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে ২৪ জানুয়ারি SSKM-র মেডিকেল বোর্ড জানায়, এই সময় গর্ভপাত করতে গেলে হয়তো দেখা যাবে নবজাতক জন্মগ্রহণ করে যাবে। পাশাপাশি মায়েরও সমস্যা হতে পারে। কারণ ওই মহিলার আগে একবার সিজ়ার হয়ে গেছে। তাছাড়া ডাউন সিনড্রোম ছাড়াও বাচ্চার আর যে সব সমস্যা রয়েছে সেগুলো হয়তো ক্রমাগত উন্নতি লাভ করতে পারে। তবে ডাউন সিনড্রোম নিয়ে বাচ্চা জন্মাবে। এই পরিস্থিতিতে গর্ভপাত করানো উচিত হবে না। আরও অপেক্ষা করাই শ্রেয় হবে।
কিন্তু এই ধরনের সমস্যা নিয়ে বাচ্চা জন্মাক এটা চাইছেন না মহিলা। পাশাপাশি এই ধরনের বিশেষ শিশুর ভরণপোষণ খরচের বিষয়টি বিবেচনা করার আবেদন জানিয়েছিলেন। বর্তমানে এই ভ্রূণের বয়স প্রায় ২৯ সপ্তাহ হয়ে গেছে। মহিলার আইনজীবী কল্লোল বসু, অপলক বসু ও অভিষেক তুষারি বলেন, এই অবস্থায় সরকারি হাসপাতালগুলি গর্ভপাতে রাজি হয়নি। সেজন্য বেসরকারি হাসপাতালে গর্ভপাতের আবেদন জানানো হয়েছিল। রাজ্যের তরফে কোনও আপত্তি না থাকায় বেসরকারি হাসপাতালে গর্ভপাতের অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট।