কলকাতা, 17 এপ্রিল : তিনদিনে সাতজন রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে মাত্র একটি বস্তি থেকে । আর তা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগে রাজ্য প্রশাসন । কিন্তু হুঁশ ফেরেনি বস্তিবাসীদের । সামাজিক দূরত্ব না মেনেই পরস্পরের সঙ্গে অবাধে মেলামেশা করছেন তাঁরা । বস্তিবাসীদের সচেতনতার এই নমুনা দেখে রীতিমতো তাজ্জব কলকাতা পৌরনিগম ও স্বাস্থ্য দপ্তরের যৌথ দল ।
বেলগাছিয়া বস্তি অত্যন্ত ঘিঞ্জি । কয়েকদিন আগে সেখানকারই এক বৃদ্ধার কোরোনায় মৃত্যু হয় । তারপরই ওই বৃদ্ধার আত্মীয় পরিজন-সহ 14 জনকে পাঠানো হয় রাজারহাটের কোয়ারান্টাইনে । সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না করতে পারে তা নিশ্চিত করতে ওই বস্তির সবকটি রাস্তাকেও ব্যারিকেড দিয়ে মুড়ে ফেলা হয় । তাছাড়াও, বস্তির গেটের সামনে প্রতিমুহূর্তে চলছে নজরদারি । খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ওই বস্তিতে যাওয়া-আসা একেবারে বন্ধ ।
গতকাল ওই বস্তিতে কলকাতা পৌরনিগম ও স্বাস্থ্য দপ্তরের 30 জনের একটি যৌথ দল যায় । প্রাথমিক কিছু তথ্য জোগাড় করার জন্য বস্তি এলাকায় কয়েকটি ভাগে ছড়িয়ে পড়ে । আর তখনই তাজ্জব হয়ে যান ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা । এলাকায় কোরোনায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হওয়া সত্ত্বেও বিন্দুমাত্র সচেতন নন বস্তিবাসী । কেউই বজায় রাখছেন না সামাজিক দূরত্ব । বস্তির বিভিন্ন গলিতে ভিড় মানুষের ।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য দপ্তর এখন ওই বস্তির অন্তত 50 জনকে কোয়ারান্টাইনে পাঠাতে চাইছে । শেষ কয়েকদিনে ওই বস্তির কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে । তাঁরা যাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন তাঁদের পরীক্ষা করে দেখতে চাইছে রাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দল । সেই কারণে গতকাল সেখানে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত 30 জনের একটি দল যায় । এই দলে ছিলেন তৃণমূলের চিকিৎসক সংসদ ডাঃ শান্তনু সেনও ।
বিশেষভাবে প্রশিক্ষিতদের ওই দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করে । ওই বস্তির কোন বাড়িতে কত বয়স্ক মানুষ থাকেন, কারও জ্বর-সর্দির মতো উপসর্গ আছে কি না সেসব প্রাথমিক বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে । এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আইসোলেশনে পাঠানো হবে । ওই বস্তির বাসিন্দাদের র্যাপিড টেস্ট করা যায় কি না, সে বিষয়েও চিন্তাভাবনা চলছে ।