পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

জিয়াগঞ্জে খুনের তদন্তে CID, আজ ঘটনাস্থানে গেল দল

বিষয়টিকে রাজনৈতিক রং দেবেন না, বলছে বন্ধুপ্রকাশের পরিবার ৷ এমন কী এই খুনের সূত্রের খোঁজে গোটা বাড়িতে তন্নতন্ন করে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ । সেই তল্লাশিতে কোনও কাগজপত্র পাওয়া যায়নি, যা প্রমাণ করবে বন্ধুপ্রকাশের RSS বা কোন রাজনৈতিক যোগ ছিল । খুন হওয়া শিক্ষকের পরিবারের লোকজন এই বিষয়টির সমালোচনা করেছে বলে নবান্নে রিপোর্ট দিয়েছে পুলিশ ।

জিয়াগঞ্জ

By

Published : Oct 12, 2019, 3:34 PM IST

Updated : Oct 12, 2019, 4:11 PM IST

কলকাতা, 12 অক্টোবর : জিয়াগঞ্জের সপরিবারে শিক্ষক খুনের ঘটনার তদন্তে এবার যুক্ত হচ্ছে CID । CID-র বিশেষ তদন্তকারী দল আজই পৌঁছে গেল ঘটনাস্থানে । ভবানীভবন সূত্রে এমন খবর পাওয়া গেছে । তদন্তকারীরা আটক দু'জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে বলে সূত্রের খবর । পাশাপাশি যে ব্যক্তিরা খুনের পর আততায়ীদের পিছন দিয়ে পালাতে দেখেছিলেন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বলতে পারে তদন্তকারী দল । উল্লেখ্য, গতরাতে মুর্শিদাবাদ পুলিশ CID-র সহযোগিতা চায় । যদিও আগেই CID তদন্তের দাবি উঠেছিল । তবে পুলিশের আশা দ্রুত এই ঘটনার কিনারা হবে ।

পুলিশ সূত্রে খবর, বন্ধুপ্রকাশের কাদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন ছিল তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা । কী কারণে দাম্পত্য কলহ, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে । এ বিষয়ে বিউটি এবং বন্ধুপ্রকাশের আত্মীয়দের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ।

বিজয়া দশমীর দিন দুপুরে জিয়াগঞ্জে নিজের বাড়িতেই খুন হন বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিউটি পাল (30) ও পুত্র অঙ্গন (5) । ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের খুন করে আততায়ীরা । এরপরই বন্ধুপ্রকাশকে RSS কর্মী বলে দাবি করে জেলা এবং রাজ্য BJP-র নেতারা । তাদের দাবি এই খুন সম্পূর্ণ রাজনৈতিক এবং RSS করার জন্যই প্রাণ গেল ওই শিক্ষকের । ঘটনা নিয়ে অপর্ণা সেন টুইট করেন । ঘটনার প্রকৃত তদন্ত দাবি করেন তিনি । অন্যদিকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই ঘটনায় CBI তদন্তের দাবি করেছেন । এরই মাঝে নবান্নে রিপোর্ট পাঠাল পুলিশের তদন্তকারী দল । সেই রিপোর্ট বলছে, এই ঘটনা নিয়ে বন্ধু প্রকাশের আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব এবং সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে । সেই জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে চেয়েছিল বন্ধুপ্রকাশের RSS যোগের বিষয়টি নিয়ে । পুলিশের দাবি, সবাই এই বিষয়টিকে ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন । এমন কী এই খুনের সূত্রের খোঁজে গোটা বাড়িতে তন্নতন্ন করে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ । সেই তল্লাশিতে কোনও কাগজপত্র পাওয়া যায়নি, যা প্রমাণ করবে বন্ধুপ্রকাশের RSS বা কোন রাজনৈতিক যোগ ছিল । খুন হওয়া শিক্ষকের পরিবারের লোকজন এই বিষয়টির সমালোচনা করেছে বলে নবান্নে রিপোর্ট দিয়েছে পুলিশ ।

বন্ধুপ্রকাশের মা মায়া পাল থাকেন সাগরদিঘিতে । বড় মেয়ের বাড়িতে । তাঁকেও ইতিমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ । তদন্তকারীদের দাবি, ছেলের RSS যোগের কথা অস্বীকার করেছেন তিনি । খুনের ঘটনা নিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন বন্ধুপ্রকাশের যে তুতো ভাই, তিনিও অনুরোধ করেছেন এই বিষয়টিকে রাজনৈতিক রঙ না দিতে । বিউটির দাদা সাক্ষী গোপাল ঘোষ থাকেন রামপুরহাটে । তিনিও একই অনুরোধ করেছেন বলে দাবি পুলিশের । প্রসঙ্গত, বন্ধুপ্রকাশ ঘনিষ্ঠ দীপ্তিমান সরকারের কাছে এক অপরিচিত ব্যক্তি নিজেকে RSS কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে ফোন করেছিলেন । কলকাতা থেকে যাওয়া সেই ফোনে পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করতে চাওয়া হয় । কিন্তু বন্ধুপ্রকাশের পরিবার তা নিতে অস্বীকার করেছে ।

পুলিশ জানতে পেরেছে, খুনের পর আততায়ীদের দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখেছে বেশ কয়েকজন । সাক্ষী হিসেবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে । তদন্তে উঠে এসেছে শিক্ষকতার পাশাপাশি আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত কারবারও করতেন বন্ধুপ্রকাশ । একটি মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কম্পানিতে জড়িত ছিলেন তিনি । একইসঙ্গে জীবনবিমার এজেন্ট ছিলেন তিনি । এইসব কারবারের জন্য তাঁর কিছু ধার দেনা ছিল । সেটা নিয়ে ইদানিং মানসিক অশান্তি চলছিল বন্ধুপ্রকাশের । পাশাপাশি পুলিশ ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে বিউটির লেখা একটি চিঠি । যেখানে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের টানাপোড়েনের বিষয়টি স্পষ্ট । তদন্তে এসব কিছুই মাথায় রাখছে পুলিশ । সূত্র জানাচ্ছে, তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে CID-র সঙ্গে আলোচনা করেই নেওয়া হবে এরপরের সব পদক্ষেপ ।

Last Updated : Oct 12, 2019, 4:11 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details