কলকাতা, 4 অক্টোবর: লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সশরীরে হাজির হতে না-বলে বরং তাঁর কাছে যে নথি চাওয়া হয়েছে সেগুলো জমা করতে বলা হোক ৷ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-কে পরামর্শ কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের। পাশাপাশি হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, সেই নথি দেখে যদি জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন মনে হলে তবে জেরা করা যেতে পারে অভিষেককে, ইডির আইনজীবীকে এমনই প্রস্তাব বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চের।
বুুধবার শুনানিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেন, "কুন্তল ঘোষ গ্রেফতার হওয়ার পর 29 মার্চ 2023 অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা থেকে সিবিআই তাঁর নাম বলানোর জন্য গ্রেফতার হওয়াদের চাপ দিচ্ছে। 31 মার্চ কুন্তল দু'টি চিঠি লিখে জানায় তাঁকে চাপ দেওয়া হয়েছে অভিষেকের নাম বলার জন্য। তারপরই সিবিআই-ইডি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই বিষয়টি জানায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে। 13 এপ্রিল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন দু'জনকেই জেরা করতে হবে। ইডি এরপর একটা ইসিআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করে।"
এদিন শুনানিতে বিচারপতি সৌমেন সেন বলেন, "লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস কোম্পানির ব্যাপারে যে আর্থিক দুর্নীতির তথ্য সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রর থেকে পেয়েছে ইডি তার তদন্ত হওয়ার দরকার তো। কারণ সেগুলো জনগণের টাকা।" অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেন, "হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের সম্পত্তি কার সে বিষয়ে ইডির আধিকারিক সঠিক তথ্য দিতে পারেননি বলে তাকে সরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি।" বিচারপতির অভিমত, "তদন্ত সঠিকভাবে হচ্ছে না মনে করলে তা করতেই পারে আদালত।"
এদিন আদালতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবীর বক্তব্য, সিঙ্গল বেঞ্চ তদন্ত মনিটরিং করতে পারে কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না ৷ বিচারপতি বলেন, "কিন্তু সমন যেটা পাঠানো হয়েছে তাতে উত্তর দিতে সমস্যা কোথায় ?" অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবীর পালটা যুক্তি, "আদালত কি এইভাবে তদন্তকারী সংস্থাকে বলতে পারে এটা দরকার, এইভাবে করা দরকার ? সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছে, আদালত তদন্তের উপর এইভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। আমরা সমনকে এড়িয়ে যেতে চাইছি না। সেটা তো কিছু তথ্য বা ঘটনাক্রম। কিন্তু সিঙ্গেল বেঞ্চ যেভাবে সম্পূর্ণ তদন্তের উপর চাপসৃষ্টি করছে তদন্তকারী সংস্থার উপর একজনের বিষয়ে সেটা কি আদালত করতে পারে ? পুলিশের বা তদন্তকারী সংস্থার কাজ তথ্য প্রমান খুঁজে বের করা। আদালতের তদন্তের মাঝপথে হস্তক্ষেপ করা উচিৎ নয়। তাতে তদন্তের গতিপথ পালটে যেতে পারে।"