ঝাড়গ্রাম, 24 মে: চায়ের দোকানি চা তৈরি করছেন ৷ নিজের হাতে চা দিয়ে আসছেন খরিদ্দারের হাতে ৷ এতে নতুন কিছু নেই ৷ তবে এই চা-দোকানির আরও একটা পরিচয় আছে ৷ তিনি ঝাড়গ্রামের তৃণমূল নেতা সুবোধ টুডু ৷ বছর বিয়াল্লিশের এই নেতা ঝাড়গ্রাম সদর গ্রামীণ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ৷ জনপ্রতিনিধি হিসেবে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও আর দশজন সাধারণের মতো চা বিক্রি করে সংসার চালান সুবোধ ৷
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "রাজনীতি আমার নেশা, চা বিক্রি করা আমার পেশা" ৷ জীবনের এই মূল মন্ত্রকে হাতিয়ার করেই শাসকদলের জনপ্রতিনিধির বড় আসনে থেকেও চা বিক্রি করেই জীবনযাপন করছেন তিনি ৷ চারদিকে যখন বহু জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে, সেই সময় ঝাড়গ্রামের সুবোধ টুডু ব্যতিক্রমী ৷
ঝাড়গ্রাম সদর গ্রামীণ ব্লকের পঞ্চায়েতে সমিতির সহ সভাপতির পদে রয়েছেন তিনি ৷ এখানে সাপধরা গ্রামপঞ্চায়েতের রাজপাড়া গ্রামে সুবোধের বাড়ি । ঝাড়গ্রাম থেকে চন্দ্রী যাওয়ার রাস্তার উপরে রাজপাড়া গ্রামের মোড়ে তাঁর চায়ের দোকান । প্রতিদিন সকাল-বিকেল স্থানীয় মানুষের সমাগম হয় সুবোধ টুডুর চায়ের দোকানে। চা-দোকানি সুবোধ কিন্তু চায়ের পাশাপাশি ভালো তেলেভাজাও তৈরি করেন ৷ চপ, পেঁয়াজি, পকোড়ি, কচুরি পাওয়া যায় তাঁর দোকানে ।
এখানেও কিন্তু কাহানি মে টুইস্ট ৷ পঞ্চায়েতের সহ-সভাপতি সুবোধের চায়ের দোকানে বহু মানুষ আসেন ৷ তাঁদের মধ্যে সবাই যে চা খেতে আসেন, এমনটা নয় ৷ বহু মানুষ তাঁদের সমস্যা নিয়ে হাজির হয় জনপ্রতিনিধির দোকানে । চা বানানোর ফাঁকে আমজনতার সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও সারেন তিনি ৷ তাদের প্রয়োজনীয় পরিষেবা দেন সুবোধ ৷ চায়ের দোকানেই রাখা থাকে স্ট্যাম্প ও কাগজপত্র । কারও হাতে সার্টিফিকেট, আবার কারও রূপশ্রী, কন্যাশ্রী বা বার্ধক্য ভাতার ফর্ম সুবোধ ফিল-আপ করে দেন চায়ের দোকানে বসে । গ্রামের অল্প শিক্ষিত মানুষদের জন্য দরখাস্তও লিখে দিতে হয় তাঁকে ৷