ঝাড়গ্রাম, 3 মে: ডাইনি অপবাদে ঠাকুমার মাথা কেটে খুনে দোষী যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিল ঝাড়গ্রাম আদালত ৷ 6 বছর আগের ঘটনায় দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারক দোষী 26 বছরের ধারাকান্ত বেরাকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন ৷ এই মামলায় অভিযুক্ত বাকি তিনজনকে বেকসুর খালাস করেছেন ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত-1 এর বিচারক জীমূতবাহন বিশ্বাস ৷ সাজাপ্রাপ্ত রাধাকান্তের মামা জানিয়েছেন, তাঁরা নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট আবেদন করবেন ৷
ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইল থানার অন্তর্গত নোয়াগা গ্রামের বাসিন্দা রাধাকান্ত বেরা ৷ 2017 সালের 9 ফেব্রুয়ারি তিনি 65 বছরের বৃদ্ধা তরুলতা বেরাকে মুড়ি খাওয়ানোর নাম করে স্থানীয় একটি শিব মন্দিরে নিয়ে যান ৷ সেখানেই ধারাল অস্ত্র দিয়ে তরুলতাদেবীর মাথা ধর থেকে আলাদা করে দেন রাধাকান্ত ৷ এর পর বৃদ্ধার কাটা মাথা নিয়ে পুরো গ্রামে দাপিয়ে বেড়ান রাধাকান্ত ৷ গ্রামবাসীদের নজরে এলে খবর দেওয়া হয় পুলিশে ৷ সাঁকরাইল থানার পুলিশ নোয়াগা গ্রামে পৌঁছয় ৷ এমনকি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো ঘটনাস্থলে যান ৷
পুলিশ সেখান থেকে বৃদ্ধার দেহ ও কাটা মুণ্ডু উদ্ধার করে ৷ অন্যদিকে, পুলিশ গ্রামে আসতেই রাধাকান্ত গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান ৷ সেই সময় তাঁর বয়স ছিল 20 বছর ৷ সেই রাতেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ জিজ্ঞাসাবাদের তিনি পুলিশকে জানান, ছোট থেকেই রাধাকান্ত খুবই অসুস্থ ছিলেন ৷ পরিবারের লোকজন তাঁকে সুস্থ করতে চিকিৎসকের বদলে, ওড়িশায় এক ওঝার কাছে নিয়ে গিয়েছিল ৷ সেই ওঝাই নাকি বলেছিল রাধাকান্তের অসুস্থতার কারণ এক ডাইনি ৷ পুলিশকে দেওয়া বয়ানে তিনি জানিয়েছিলেন, রাধাকান্তের মনে হয়েছিল তরুলতা বেরাই ডাইনি ৷ তাই তাঁকে রাতের অন্ধকারে শিবমন্দিরে খুন করেন রাধাকান্ত ৷