রাজগঞ্জ, 25 মে:পুলিশ তাঁর বাইকে কোনও কেস দেয়নি। অথচ এক হাজার টাকা ফাইন এসেছে ! সাত সকালে মোবাইলে ফাইন সংক্রান্ত মেসেজ আসতেই চোখ কপালে ওঠে যুবকের। রাজগঞ্জ থানার ট্রাফিক পুলিশ জরিমানা করা হয়েছে বলেও মেসেজে লেখা হয়েছে। এর পর থানার এসে যুবক পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলতে, পুলিশেরও ভীমড়ি খাওয়ার উপক্রম। একই রঙের একই নম্বর প্লেটের দুই মোটর বাইককে ঘিরেই যত বিপত্তি।
এই ঘটনা সামনে আসতেই আসরে নামে পুলিশ। তদন্ত করতে গিয়ে ভুয়ো নম্বর প্লেটের হদিশ পায় পুলিশ ৷ বাইকে ভুয়ো নম্বর প্লেট ব্যবহার করার অভিযোগে সাগর গোয়ালা নামে এক যুবককেও গ্রেফতার করে রাজগঞ্জ থানায় পুলিশ। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয় চোরাই মোটর বাইকটিও। পুলিশের সূত্রে খবর, বাইক চুরি করে একই রঙের বাইকের নম্বর নকল করে অন্য বাইকের নম্বর হাতে লিখে ব্যবহার করা হচ্ছিল। ধৃত রাজগঞ্জের ফাটাপুকুরের বাসিন্দা। থানার আইসি পঙ্কজ সরকার জানান, দুপুরে থানায় এসে হালালাল সরকার নামে এক ব্যক্তি একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর দাবি, রাজগঞ্জের ট্রাফিক পুলিশ তাঁর নামে এক হাজার টাকার চালান কেটেছে। গত 22 তারিখ তাঁর মোবাইলে মেসেজ আসে ফাইনের ৷
অভিযোগকারীর দাবি, তাঁর নীল রঙের হিরো গ্ল্যামার বাইকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর WB74AS9395 ৷ সেই নম্বরের বিরুদ্ধে জরিমানা বাবদ ট্রাফিক চালান জারি হয়েছে ৷ তাঁর দাবি, যখন এই চালান কাটা হয়েছে, তখন তিনি বাইক নিয়ে রাজগঞ্জেই আসেননি। তাহলে পুলিশ কার বাইকের চালান কাটলেন ! রাজগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশকে গোটা বিষয়টি জানালে যে মোটর বাইকের বিরুদ্ধে জরিমানা করা হয়েছে সেই গাড়ির মালিক ও বাইকের ছবি তাঁকে দেখায় পুলিশ। অভিযোগকারী হালালাল সরকারের দাবি, পুলিশের দেখানো ছবি দেখে তিনি অবাক হয়ে যান। কারণ হিসাবে তাঁর দাবি, যে বাইকের ছবি পুলিশ দেখায় তার সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে হালালাল সরকারের নিজের বাইকের। যদিও গাড়ি মালিকের ছবি আলাদা। কিন্তু নম্বর প্লেট এক ৷ কিন্তু পুলিশের দেখানো নম্বর প্লেটের নম্বর হাতে লেখা। এরপরই টনক নড়ে পুলিশের ৷ হালালাল সরকার রাজগঞ্জ থানার অভিযোগও দায়ের করে।
আরও পড়ুন:11 বছর পর বিশদে স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে হাওড়া ব্রিজের, সহযোগিতায় আইআইটি মাদ্রাজের বিশেষজ্ঞরা
এরপরই রাজগঞ্জ থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পুলিশের দাবি, চুরি হওয়া মোটর বাইকে নম্বর জাল করে ব্যবহার করছিলেন এক ব্যক্তি। তদন্তে নেমে ফাটাপুকুর ঝানঝুয়া পাড়া এলাকা থেকে সাগর গোয়ালা নামে এক যুবককে গ্রেফতারও করা হয়। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয় একই নম্বরের একই রঙের চুরি যাওয়া মোটর বাইক। ধৃতের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ধৃতকে জলপাইগুড়ি আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। কোথা থেকে মোটর বাইক সে চুরি করল তাও জানতে চাইছে পুলিশ ৷